কয়লা খনিতে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর লক্ষণ নয়, মোদিকে চিঠি মমতার

রাজেন রায়, কলকাতা, ২৭ জুন: কিছুদিন আগে দেশবাসীর সামনে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্র যে কথায় আর কাজে এক সামঞ্জস্য রাখতে পারছে না, তা মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি দেশের কয়লা খনিতে একশো শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। কিন্তু সেটা করলে ভারত আত্মনির্ভর হতে পারবে না বলে দাবি করে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে তিন পাতার একটি চিঠি পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই নীতিতে প্রথমত প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। দ্বিতীয়ত, এমন কিছু বিদেশি প্রযুক্তিও আসবে না, যেটা ভারত সরকারের হাতে নেই। একই সঙ্গে বিশ্বের প্রায় ১০০ বিনিয়োগকারী সংস্থা কয়লায় বিনিয়োগের বিপক্ষে। এখন তারা পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির প্রতি বেশি আগ্রহী। সেই কারণে এই ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের আশা অবাস্তব। আর এতে প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত গড়ার যাত্রাও ধাক্কা খাবে। তাই এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন।

মমতার আরও দাবি, কোল ইন্ডিয়াকে সরকারি হাতে রাখতেই ১৯৭৩ সালে এই সংস্থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব করা হয়। এখন কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড একটি লাভজনক সংস্থা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষেই ২৭ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। এই পরিস্থিতিতে এই ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের নীতি কোল ইন্ডিয়ার সাফল্য ও মনোবল দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

কলকাতা থেকে কোল ইন্ডিয়ার বিভিন্ন দফতর সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত দিল্লি নিয়েছে তাও পুনর্বিবেচনার দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের ৮০ শতাংশ কয়লা খনিই পূর্ব ভারতে রয়েছে। কোল ইন্ডিয়া কলকাতার হেড কোয়ার্টার থেকেই সেই সব খনির কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোল ইন্ডিয়ার চারটি সংস্থা ভারত কুকিং কোল লিমিটেড, সেন্ট্রাল কোলফিল্ডস লিমিটেড, সাউথ ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড এবং মহানদী কোলফিল্ডস লিমিটেডের সদর দফতর কলকাতা থেকে সরিয়ে নেওয়া নিলে এটা ওই সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্তদের এবং কর্মীদের সমস্যা বাড়বে।
মহামারীর সময়ে কেন্দ্রের আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ওই চার সংস্থার কর্মীদের অন্যত্র বদলি করার সিদ্ধান্ত আরও সমস্যার কারণ বাড়াবে। কোল ইন্ডিয়ার এক শহরে কাজ করার নেটওয়ার্কও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজেই এই সিদ্ধান্তও পুর্নবিবেচনা করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *