খুনের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতে লুকিয়ে ছিল শান্তিনিকেতনে! চার বাংলাদেশি সহ ধৃত ছয়জনের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত

আশিস মণ্ডল, বোলপুর, ২৮ সেপ্টেম্বর: গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চার বাংলাদেশী সহ ছয়জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। সোমবার তাদের বোলপুর আদালতে তোলা হলে প্রত্যেককে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন থেকে রাজ্যজুড়ে দুষ্কৃতীদের ধরপাকড় চলছে। সেই মতো রাজ্যজুড়ে নজর রেখে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং রাজ্য পুলিশ। রবিবার রাতে শান্তিনিকেতনের তালতোড় গ্রামে দিলীপ ঘোষের বাড়ি থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে নাইন এমএম পিস্তল ও বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করা হয়েছে। তারা নাম ভাঁড়িয়ে ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া ছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ধৃতরা হল রফিক ফকির ওরফে বাবু সরকার, মহঃ মুরাদ মুন্সি, ডিলা মিঞা ওরফে দিলওয়ার মিঞা ওরফে দিলু, মহম্মদ বিলাল হোসেন, সাহিদ আনোয়ার আলি ওরফে রাজু এবং শেখ কাজল। রফিকের বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায়। মুরাদ মুন্সী একই দেশের ঢাকার রামপুর বনসিটির বাসিন্দা। ডিলা মিঞা এবং বিলাল হোসেন বাংলাদেশের বুনিয়াপাড়া, খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা। সাহিদ আনোয়ারের বাড়ি শান্তিনিকেতন থানার খোশকদমপুর এবং কাজল বোলপুর থানার মুলুকের বসিন্দা। ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

সরকারি আইনজীবী ফিরোজ পাল বলেন, “দুজন ভারতীয় বলে দাবি করলেও তারা নিজেদের পরিচয়পত্র দেখাতে পারেনি। বাকি চারজন বাংলাদেশের নাগরিক হলেও তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, ভিসা পাওয়া যায়নি। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আর্মস অ্যাক্ট, বিস্ফোরক অ্যাক্ট এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ধারা দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা বিচারক প্রত্যেককে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতাকে খুনের উদেশ্যে তারা ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেছিল”। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে তাদের সঙ্গে লাভপুর এবং নানুরের দুজন জড়িত আছে। তারা খুনের সুপারিশ নিয়েছে। এছাড়া, মেদিনীপুর জেলের দুই বন্দিও দুষ্কৃতী দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সোমবার তাদের বাড়িতেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

বিজেপির তপসিলি মোর্চার বীরভূম জেলা সভাপতি অমৃতলাল ঘোষ বলেন, “সাড়া রাজ্য এখন বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। বার বার বীরভূমের সঙ্গে জঙ্গি যোগের প্রমাণ মিলেছে। এর আগে খাগড়াগড় কাণ্ডে নানুর, লাভপুর ও বোলপুর থেকে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এমনকি অধুনা পাইকড় থানা এলাকা থেকেও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সরকারের আমলে দুষ্কৃতীরা রাজ্যে বহাল তবিয়তে বসে রয়েছে নিশ্চিন্তে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *