একদিনে রেকর্ড ১৫৬০ সংক্রমণে ৩০ হাজার পার রাজ্যের! মৃত্যু ২৬, সুস্থ ৬২২

রাজেন রায়, কলকাতা, ১২ জুলাই: প্রত্যেকদিন পুরনো সংক্রমণের রেকর্ড ভাঙার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল রবিবারও। লকডাউনের মধ্যেও একদিনে ১৫৬০ সংক্রমণে ৩০ হাজারের গণ্ডি পার করে ফেলল রাজ্য। শুধু তাই নয়, সুস্থতার হারও অনেকটা নেমে ৬১.৯০ শতাংশে এসে থামল।লাগাতার উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে রাশ টানতে কার্যত দিশাহারা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। আচমকা যেন কলকাতায় বিপুল মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে মৃত্যুর হার।

রবিবার প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে ২৪ ঘন্টায় নতুন সংক্রমণের হদিশ মিলেছে ১৫৬০ জনের। এদিনও রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের, যার মধ্যে ১৩ জন কলকাতারই। সুস্থ হয়েছেন ৬২২ জন।

২৪ ঘন্টায় ১৫৬০ জন করোনা পজিটিভে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩০০১৩ জনে। আরও ২৬ জনের মৃত্যু হওয়ায় রাজ্যে সরকারি হিসেবে মোট করোনায় মৃত্যু ৯৩২ জনের। এদিকে ২৪ ঘন্টায় আরও ৬২২ জন সুস্থের হিসেব ধরলে মোট সুস্থ হলেন ১৮৫৮১ জন। এর মধ্যে কলকাতাতেই সংক্রমণ রেকর্ড ৪৫৪ জনের, রেকর্ড মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। মোট মৃত ৯৩২ জনের মধ্যে ৪৯৯ জন কলকাতারই। এদিনও ৩৫৭ জন সংক্রমণে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে উত্তর ২৪ পরগনাও।

এদিন অন্যান্য জেলার সঙ্গে কলকাতাতে এদিনও ১৫৩ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১১৭ জন, হাওড়ায় ৯৮ জন, হুগলিতে ৬০ জন এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫২ জন সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু বিপুল সংক্রমণের জেরে সুস্থতার হার অনেকটা কমে দাঁড়িয়েছে ৬১.৯০ শতাংশে। এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ১০৫০০ জন। তার মধ্যে এদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৯১২ জন।

বুলেটিনে আরও জানানো হয়েছে, এদিন পর্যন্ত রাজ্যের ৫৪টি ল্যাবে মোট করোনা টেস্টের সংখ্যা ৬১৭০৭৯ জনের। তার মধ্যে ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১১৭০৯ জনের। রাজ্যের ৮০টি করোনা হাসপাতাল, ২৬টি সরকারি এবং ৫৪টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০৮৬২টি বেড আছে, আইসিইউ পরিষেবা রয়েছে ৯৪৮ জনের। ভেন্টিলেটর রয়েছে
৩৯৫টি। তার ২৭.০৩ শতাংশ রোগী ভর্তি আছেন।

সরকারি ৫৮২টি কোয়ারেন্টাইনে এখন রয়েছেন ৪৭৫২ জন। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১০০৮৯১ জনকে। হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩০৮৩৯ জন। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৩২৫১৮১ জনকে। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যে জানানো হয়েছে, ১৫৬৪টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ৮৫১৬ জন শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে। করোনা পরীক্ষা করে সুস্থ দেখে ২৬৬৫৯৩ জন শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে সেফ হোম ও তার বেড সংখ্যা এবং সেখানে রোগীদের সংখ্যা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাজ্যের ১০৬টি সেফ হোমে ৬৯০৮টি বেড রয়েছে এবং তাতে ২৪৭ জন রোগী রয়েছেন।

এছাড়া এদিনের বুলেটিনে জেলাওয়াড়ি তথ্যে জানানো হয়েছে, কলকাতায় এদিন রেকর্ড ৪৫৪ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় মোট সংক্রমণ ৯৬০৮ জনের। এদিন কলকাতায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হওয়ায় কলকাতাতে মোট মৃত্যু ৪৯৯ জনের। এছাড়া এদিন উত্তর ২৪ পরগনাতেও রেকর্ড ৩৫৭ জন সংক্রামিতের সংখ্যা বাড়ায় মোট আক্রান্ত সংখ্যা ৫৬২৯ জন। এখানেও এদিন আরও ৩ জনের মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃত্যু ১৬৪ জন। এছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৪ জন, হাওড়ায় ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ২ জন করে ৪ জন, দার্জিলিং ও মুর্শিদাবাদে ১ জন করে ২ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিন অন্যান্য জেলার সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৬১ জন, হাওড়ায় ১২৭ জন, জলপাইগুড়িতে ৫৬ জন, হুগলি ও উত্তর দিনাজপুরে ৫৪ জন করে এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ৫২ জনের উল্লেখযোগ্য হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম ছাড়া সংক্রমণ বেড়েছে রাজ্যের বাকি সমস্ত জেলাতেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *