৩৬ ঘন্টায় ৩০ টি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ যাদবপুর থানায়, আতঙ্কে বাসিন্দারা

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২ ডিসেম্বর:
সাম্প্রতিক সময়ে শহরের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ প্রকাশ্যে। এটিএম জালিয়াতি, স্কিমার জালিয়াতির মতো একাধিক ঘটনায় এমনিতেই জেরবার শহরের মানুষ। এর মধ্যেই যাদবপুরে গত ৩৬ ঘণ্টায় জমা পড়ল ৩০টি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ। এত কম সময়ের মধ্য এতগুলো জালিয়াতির অভিযোগ জমা পড়ায় রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে তদন্তকারী আধিকারিকরা। ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব ভার নিয়েছে লালবাজার ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখা।

সোমবার দুপুরেই যাদবপুর থানায় আসেন গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক ফ্রড শাখার আধিকারিকরা। বেশ কয়েকজন প্রতারিত গ্রাহকের সঙ্গেও কথা বলেন গোয়েন্দারা। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

এখনো পর্যন্ত যে বিষয়গুলি পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে তা হল, প্রতারিত গ্রাহকরা সকলেই যাদবপুর এলাকার বাসিন্দা। গত এক মাসের মধ্যে তারা প্রত্যেকেই যাদবপুর এলাকার কোনও না কোনও এটিএম থেকে টাকা তুলেছিলেন। তখনই তাদের ডেবিট কার্ড ক্লোন করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। পুলিশের বিশেষ নজরে রয়েছে যাদবপুরের সুলেখা এলাকার একাধিক এটিএম।

প্রত্যেকেরই টাকা তোলা হয়েছে গতকাল পয়লা ডিসেম্বর। যতজন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছে সেগুলি প্রত্যেকটিই হয় স্যালারি একাউন্ট নয় পেনশন অ্যাকাউন্ট। প্রতারকরা জানতো, মাসের ১ তারিখে বেতন বা পেনশন জমা পড়বে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, কার্ড ক্লোনের কাজটি করা হয়েছিল সপ্তাহ খানেক আগেই। হয়তো বিশেষভাবে যন্ত্র বসিয়ে কার্ড ক্লোনিংয়ের কাজটি আগে থেকেই সেরে নেওয়া হয়েছে। তারপর খুলে নেওয়া হয়েছে যন্ত্র।

তার কারণ, রবিবার একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পর যাদবপুর থানার পুলিশ এই এলাকার একাধিক এটিএমে হানা দেয়। কোনও এটিএমে ক্লোনারের মতো এক্সটার্নাল ডিভাইস লাগানো আছে কিনা খতিয়ে দেখা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার কোনও এটিএমেই কোনও রকম এক্সটার্নাল ডিভাইস খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই তদন্তকারীদের অনুমান, গ্রাহকদের কার্ড ক্লোন করার কাজটি সপ্তাহ খানেক আগেই করা হয়ে থাকতে পারে।

এরপর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করা হচ্ছিল। গতকাল এক তারিখে একাউন্টে বেতন বা পেনশন জমা করতেই তা তুলে নেওয়া হয়। সব ক্ষেত্রেই টাকা তোলা হয়েছে দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকেই। অর্থাৎ দিল্লি থেকে কোনও গ্যাং এসে সুকৌশলে এটিএম গুলিকে টার্গেট বানিয়ে অপারেশন সেরে ফের দিল্লি ফিরে গিয়ে থাকতে পারে। বেশকিছু এটিএম চিহ্নিত করে তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here