আমতার নাপিত পাড়ায় একসঙ্গে ৩০ জনের শরীরে করোনার হদিশ

আমাদের ভারত, হাওড়া, ৪ জুলাই: এলাকার বিভিন্ন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষৌরকর্ম করা এক ক্ষৌরকারের থেকে আমতার নাপিত পাড়ার ৩০ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ হল। ইতিমধ্যে ওই ক্ষৌরকারকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার পাশাপাশি ১২ জনকে একটা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ও ১৭ জনকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাপিত পাড়ায় ঢোকার সমস্ত রাস্তা সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং গোটা এলাকাটিকে কন্টাইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, নাপিত পাড়ার বাসিন্দা ওই যুবক একটি সেলুনে কাজ করলেও লকডাউনের জেরে দোকান বন্ধ থাকায় বাড়িতেই বসে ছিল। যদিও এর মাঝে অর্থের টানে পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষৌরকর্ম করতে সে বিভিন্ন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যায়। অভিযোগ এর কয়েকদিন পরেই ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়লে তার লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং তার রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে যুবককে হাসপাতলে ভর্তি করার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ, যদিও প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে যুবকের পরিবারের সদস্যরা এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে আর এতেই নাপিত পাড়ার বেশ কয়েকজনের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়।

এদিকে একাধিক ব্যক্তির শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাপিত পাড়ার ২০০ জনের লালা রসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। শুক্রবার ১২০ জনের রিপোর্ট আসলে দেখা যায় ২৯ জন করোনা পজিটিভ। রবিবার বাকি ৮০ জনের রিপোর্ট আসার কথা।

এদিকে এক সঙ্গে এতজনের শরীরে করোনা সংক্রমণের হদিশ পাওয়ায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শনিবার বিকেলেই আমতা ১ নং বিডিও অফিসে রাজ্যের মন্ত্রী ডাক্তার নির্মল মাজির নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে অতিরিক্ত জেলাশাসক, হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, আমতার দুটি ব্লকের বিডিও, দুটি ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছাড়াও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মন্ত্রী ডাক্তার নির্মল মাঝি বলেন, একসঙ্গে এত জনের শরীরে করোনা সংক্রমণের হদিশ পাওয়া গেলেও আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রশাসন সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মানুষকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তির কোনও উপসর্গ নেই।

অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার ভবানী দাস জানান, স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *