আমফান ত্রাণে দুর্নীতির অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে, নবান্ন থেকে শো-কজ করা হল ৫ বিডিওকে

রাজেন রায়, কলকাতা, ২২ জুন: প্রথমে দুর্নীতির অভিযোগে বদলি করা হয়েছিল খাদ্যসচিব থেকে স্বাস্থ্যসচিবকে। তখনও মন্ত্রীদের কেন প্রশ্ন করা হচ্ছে না এই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। এবার যেন সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের ৪ জেলার ৫ বিডিওকে শো কজ করল নবান্ন। যদিও মূল অভিযোগ ছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের দুর্নীতির দিকেই।

ওই শো-কজ নোটিশে বলা হয়েছে, আমফানের জন্য বরাদ্দ ত্রাণ বণ্টনে স্বজনপোষণ ও কারচুপি করেছেন ওই বিডিওরা। ত্রাণ পেয়েছেন বিডিও ও পঞ্চায়েত ঘনিষ্ঠরা, কিন্তু সাধারণ মানুষ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হয়ে গিয়েছেন। এর ফলে মুখ পুড়েছে প্রশাসনের। এক্ষেত্রে স্বজনপোষণের জন্য সরাসরি বিডিওদের দিকে আঙুল তুলেছে নবান্ন। এটাও বলা হয়েছে, জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে দুর্নীতির দায়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের নজির নতুন নয়। চলতি বছরের এপ্রিলে শাসকদল তৃণমূল ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেই সময় সরিয়ে দেওয়া হয় খাদ্যসচিব মনোজ আগরওয়ালকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কেন্দ্রের কাছে মৃতের সঠিক তথ্য পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগে অপসারণ করা হয় রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব বিবেক কুমারকে।

সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আমফানের ত্রাণ বিলিতেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামতির জন্য সরকারি ২০,০০০ টাকা নিয়ে ব্যাপক স্বজনপোষণ চলছে বলে দাবি বিরোধীদের। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এ রাজ্যে এরাজ্যে পরিদর্শনে এলে তাদের সাথেও বিরোধীরা দেখা করে বলেছেন, গরিব মানুষের অ্যাকাউন্টে এমনভাবে টাকা পাঠাতে যাতে তৃণমূলের কোনও নেতার হাতে না যায়। কারণ এই নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে। সম্প্রতি আমফানের ত্রাণ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকায় হুগলির গরলগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। এবার সরাসরি ৪ জেলার ৫ বিডিও-র কাছে এই নিয়ে জবাবদিহি চাইল রাজ্য সরকার। রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, বিডিওরা যে জবাবই দিন না কেন, দোষ না থাকলেও কোপে পড়তে হবে তাদেরকেই। আর এভাবেই আমফান দুর্নীতির বিষয়টি ধামাচাপা দেবে রাজ্য সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *