‘গোলি মারো’ কাণ্ডে জারি বিজেপি কর্মীদের ধরপাকড়, গ্রেফতারি বেড়ে ৭

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ৪ মার্চ: অমিত শাহের সভার পর ৪ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও এই কান্ডে গ্রেফতারি জারি রেখেছে কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার পানিহাটি ও চেতলা গ্রেফতার করা হয়েছিল ২ বিজেপি নেতাকে। বুধবার সকালে সোদপুর থেকে প্রশান্ত সরকার নামে এক বিজেপি কর্মীকে ফের উত্তর ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এছাড়া হাওড়া থেকে মুকেশ সিং নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই নিয়ে এই ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে। এই গ্রেফতারি যে এখন জারি থাকবে, সেটা জানিয়েও দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল। জানা গিয়েছে, সভার দিনের সভার প্রত্যেকটি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একজনের মুখেও ‘গোলি মারো’ শুনলে তাকে ছাড়বে না পুলিশ।

গত রবিবার কলকাতার ধর্মতলায় শহিদ মিনার ময়দানে ছিল বিজেপির সভা। সেখানে মুখ্য বক্তা হিসাবে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভায় আসার পথে ধর্মতলায় বেশ কিছু বিজেপি নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের শ্লোগান দিতে দেখা যায়, ‘দেশ কি গদ্দারোঁ কো, গোলি মারো শালো কো।’ দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরের তোলা এই বিতর্কিত শ্লোগান যে দলকে ভোটে ডুবিয়েছে তা স্বীকার করেছেন খোদ অমিতও। কিন্তু তারপরও বিজেপি তাদের দলীয় কর্মীদের রাশ টানতে পারেনি। তারপরও এই শ্লোগান শোনা গিয়েছে কলকাতার রাজপথে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই শ্লোগানের বিরুদ্ধে। বলেছেন, দেশের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির জন্য এটা দানবীয় শ্লোগান। যারা যারা এই শ্লোগান দিয়েছে তাদের সকলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি যে পুলিশ প্রশাসন রক্ষা করবে, গ্রেফতারির সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলায় তা বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে।

রবিবার রাত থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল গ্রেফতারির পালা। সেদিন রাতেই গ্রেফতার হয় সুরেন্দ্রকুমার তিওয়ারি, ধ্রুব বসু ও পঙ্কজ প্রসাদ। এদের আদালতে তোলা হলে ধ্রুব বসুকে জামিন দিলেও বাকি দুইজনকে পুলিশি হেফাজতে পাঠায় আদালত। মঙ্গলবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ঘোলা থেকে ‘গোলি মারো’ শ্লোগান কাণ্ডে গ্রেফতার হয় বিজেপি নেতা সুজিত বড়ুয়া। মঙ্গলবার রাতেই আবার কলকাতার চেতলা থেকে গ্রেফতার হয় সন্দীপ সোনকার। বুধবার সকালে আবার সোদপুর থেকে গ্রেফতার হয় প্রশান্ত সরকার। এদের সকলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ধারায় বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে হিংসা ছড়ানো, ৫০৫ ধারায় জনগণকে ভয় দেখানো, ৫০৬ ধারায় হুমকি, ৩৪ ধারায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার সুজিত বড়ুয়াকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হলে তাঁকে ৫ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *