হাঁড়িয়ার নেশা করে খড়গপুরে রাতভর গ্রামে তাণ্ডব চালাল বুনো হাতির দল

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: তিনদিন ধরে দলমার দাঁতালদের তাণ্ডবে তটস্থ খড়্গপুর গ্রামীণের হরিয়াতাড়া এলাকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার রাতে দাঁতাল দলটির তাণ্ডবে আতঙ্ক আরও চেপে বসেছে মানুষের মনে। হাঁড়িয়ার নেশা করে বৃহস্পতিবার রাতভর গ্রামে তাণ্ডব চালাল বুনো হাতির দল।

বাসিন্দারা জানান, দলে ২২টার মতো হাতি ছিল। হাতি আসছে জানতে পেরে তারা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় প্রাণে রক্ষা পান। ফাঁকা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে তাণ্ডব চালালেও কেউ হতাহত হননি। দলমার দাঁতালরা ক্ষতি করেছে ফসলেরও। বনদপ্তর অবশ্য এদিনই তদন্ত করে ঘর ভাঙ্গার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাসিন্দারা বলেন, তিনদিন হল হাতির দলটি হরিয়াতাড়ার জঙ্গলে এসে ঘাঁটি গেড়েছে। মাঝেমধ্যেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এদিন ভোরের দিকে হাতির দলটি হঠাৎ গ্রামে ঢুকে পড়ে। পথে কোথাও হাঁড়িয়ার সন্ধান পেয়ে পান করে।

স্থানীয় বাসিন্দা বিষ্ণুপদ মুদি বলেন, গ্রামে এসেই হাতিগুলি বিভিন্ন ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। ভয়ে আমরা বাইরে বেরিয়ে যাই। আমার বাড়িটা তো একেবারে ভেঙ্গে দিয়েছে। এরপর একে একে শম্ভু মুদি, ভরত মুদি, খাঁদি মুদি, কমলা মুদির ঘর ভাঙ্গে।

খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, কয়েক দিন আগে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম থেকে প্রায় ২৩টি হাতির একটি দল এসে কলাইকুণ্ডা রেঞ্জে ঢুকেছে। তারা জেটিয়ার জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। সেই দলটিই এদিন ভোরে ওই  গ্রামের চারটি বাড়ি ভাঙ্গচুর করে। ফসলেরও কিছু কিছু ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, হাঁড়িয়া খেয়ে নেশা করেছিল হাতিগুলি। তাই লোকালয়ে ঢুকে যায়। সাধারণত এরা লোকালয়ে যায় না। শীতকাল হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের ভাঙ্গা বাড়িতে থাকতে কষ্ট হবে। সে কথা ভেবে এদিনই আমরা বাড়ির ক্ষতিপূরণের অর্থ দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফসলের ক্ষতির তদন্ত করে পরে সেই অর্থ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, হাতিগুলিকে অন্যত্র তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ওরা যেদিকে যেতে চাইবে সেদিকেই নিয়ে যাওয়া হবে।

বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, হাতিগুলি বেশিরভাগ সময়ে একসঙ্গে থাকে। একসঙ্গে খাওয়া দাওয়াও করে। মাঝে মাঝে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গিয়ে তাণ্ডব চালায়। হরিয়াতাড়ার জঙ্গলে দু’দিন হল ওরা এসেছে। গতিবিধির নজর রাখতে বলা হয়েছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *