‘কলকাতা নিবেদিতা শক্তি’ ও ‘আরাধ্যা’র যৌথ উদ্যোগে বর্ষবরণ

সুকন্যা চ্যাটার্জি, আমাদের ভারত, কলকাতা, ২২ এপ্রিল: ‘এসো হে বৈশাখ’ – বৈশাখের আগমন অবশ্য কয়েকদিন আগেই হয়ে গেছে, তাকে বরণ করার জন্য কতই না কী পরিকল্পনা হয়ে থাকে। কমবেশি পুরো মাস জুড়েই চলে বর্ষবরণের নানান অনুষ্ঠান। আজ নতুন বছরকে বরণ করে নেবার জন্য ইন্দুমতি সভাগৃহে বর্ষবরণ- ১৪৩০ ও বসুন্ধরা দিবস পালন করা হল ‘কলকাতা নিবেদিতা শক্তি’ ও ‘আরাধ্যা’র যৌথ উদ্যোগে।

মন্ত্রোচ্চারণ ও বৃক্ষে জলদানের মধ্যে দিয়ে শুভারম্ভ হয় এই পর্বের। নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, শ্রুতি নাটক প্রভৃতি জমজমাট করে তোলে এই বর্ষবরণ পর্বকে।

আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন তন্দ্রা ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী ভাষণ দেন ড.শম্পা দাস। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করে রাঘবপুর শক্তি ইউনিট। এছাড়াও ভয়েস অফ ওয়ার্ল্ড-এর ১৪ জন প্রতিবন্ধী শিল্পীর যৌথ সঙ্গীত পরিবেশন এই বৈশাখী অনুষ্ঠানকে মধুময় করে তোলে। আবৃত্তি করেন কৃষ্ণা মহাজন, অধ্যাপিকা ড.শম্পা দাস।

প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য্য ও রাঘবপুর শক্তি ইউনিট-এর অনবদ্য নৃত্য পরিবেশন ছিল নজরকাড়া। কলকাতা নিবেদিতা শক্তির অন্তর্ভুক্ত বিজ্ঞানিকা শক্তির সায়েন্স ক্লাবের মেয়েরা জলবায়ুর পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে ছ’টি ঋতুর ওপর বসুন্ধরা নামে অনুষ্ঠান করে। চন্দন রায়চৌধুরীর পরিচালনায় শ্রুতিমধুর ‘জানালা’ শ্রুতি নাটকটি এই সন্ধ্যার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।

এছাড়া ‘আরাধ্যা’র পক্ষ থেকে বাঙালির আটপৌরে জীবনের বিভিন্ন দিক সঙ্গীতের মাধ্যমে পরিবেশিত হয় অনুপম মুহুরী,সুমন বড়াল ও রাখী রায়ের কন্ঠে এবং পরিচালনায়। যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন কিবোর্ড-এ ত্রিদিব ঘোষাল,গীটার-এ সোমনাথ গুপ্ত, তবলায় আশীষ পাত্র এবং শব্দপ্রক্ষেপন-এ ভুলি সাউন্ড। যার অনবদ্য সঞ্চালনায় দর্শক টানটান উত্তেজনার সাথে বসে থাকতে বাধ্য হয়েছেন, তিনি হলেন ড.পৃথা ভট্টাচার্য।

অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে আজকের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কে কলকাতা নিবেদিতা শক্তি’র পক্ষ থেকে ড.ঋতা ভট্টাচার্য বলেছেন, “মানুষ বিজ্ঞানমনস্ক হোক এবং প্রকৃতির সংস্পর্শে আসুক, মানুষ কে বাঁচতে হলে প্রকৃতির সাথে থাকতে হবে। প্রকৃতিকে বাঁচাতে হবে আর তাকে বাঁচাতে হলে গাছ লাগাতে হবে। প্রকৃতি বাঁচলে মানুষ বাঁঁচবে। এই গরমের মধ্যেও অনেক মানুষ যে এই অনুষ্ঠানে এসেছেন তারা সচেতন হয়েছেন বলেই হয়তো সম্ভব হয়েছে। প্রকৃতি কে ভালবেসে গাছ লাগান, সুন্দর করে তুলুন এই সমাজ, নিজে বাঁচুন এবং অন্যকে বাঁচান।”

আরাধ্যা’র পক্ষ থেকে ড. রাখী রায় বলেন, “প্রতিটি মানুষের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা আছে তার বিকাশ ঘটানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। শুধুই লেখাপড়া নয়; তার পাশাপাশি গান, আবৃত্তি, সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা, খেলাধুলা, নৃত্য প্রভৃতি বিষয় নিয়েও মানুষের চর্চা করা উচিত। একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে গেলে তার বুদ্ধিমত্তার ও ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ জাগরণ প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে ‘আরাধ্যা’ কাজ করে চলেছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *