উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতির মাঝে রেলযাত্রাকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষনীয় করতে আসছে জোড়া ভিস্টাডোম কোচ

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৬ ফেব্রুয়ারি: উত্তরবঙ্গের জঙ্গল, চা-বাগানের মাঝের রেলযাত্রাকে আরও মনোরম করতে এবার উদ্যোগী হল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশন। মূলত ডুয়ার্সের প্রকৃতিকে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতে এবার আলিপুরদুয়ার ডিভিশন রেল বোর্ডের কাছে এক জোড়া ভিস্টাদোম কোচ আনার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে ডিআরএম কে. এস. জৈন দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে শিলিগুড়ি জংশন থেকে আলিপুরদুয়ার জংশনের মধ্যে যাত্রীবাহি স্বল্প দূরত্বের ইন্টারসিটি বা প্যাসেঞ্জার ট্রেনে জুড়ে দেওয়া হবে অভিনব অত্যাধুনিক কোচগুলি।

ডি.আর.এম কে.এস জৈন জানান, “আমরা ইতিমধ্যেই রেল বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুত দুটি কোচ চলে আসবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুটি কোচেই ছাদ ও দেওয়ালের একটা বড় অংশ কাচের তৈরি হবে। যার ফলে মানুষ সহজেই রেল কামরার ভেতর থাকলেও বাইরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পাবেন।”

উল্লেখ্য, দেশের দুটি রেল ডিভিশনে ইতিমধ্যেই সফলভাবে ভিস্টাডোম কোচ ব্যবহার শুরু করেছে ভারতীয় রেল। পর্যটকদের কাছে ভাড়া কিছুটা বেশি হলেও জনপ্রিয় হয়েছে কোচগুলি। এদিকে, আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত রেললাইন যা রেলের ভাষায় বিজি-৩ সেকশন। কমবেশি ২০টি চা-বাগান, ৫টি অরণ্য, সেবকের কাছে কিছুটা পাহাড়ি অংশ দিয়ে ১৬৪ কিমি রেলপথ সাজানো।
পর্যটনমহলের একাংশ জানান, বিজি-৩ রেলপথটি বরাবরই পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয়। এই রেলপথে উত্তরবঙ্গের বৈচিত্র্যময় চিত্র ধরা পরে। মহানন্দা, গরুমারা, জলদাপাড়া, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পকে ছুয়ে যায় রেলপথটি।

জানা গেছে, আপাতত চেন্নাইতে ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে বিশেষ কোচ তৈরি হচ্ছে। প্রতিটি কোচে থাকছে ৪৪টি বসার আসন। ট্রেনের জিপিএস, ওয়াইফাই, সিসি ক্যামেরা, লেড লাইট, খাবার যায়গার মত আধুনিক ব্যবস্থা আছে। কোচের ছাদের প্রায় সিংহভাগ অংশ বিশেষ কাচে তৈরি, যা অতিবেগুনী রশ্মীকেও রুখতে সমর্থ বলে জানা গেছে।পুরোপুরি পর্যটকদের কথা ভেবেই কোচগুলি নির্মাণ হচ্ছে দেশের জনপ্রিয়তম পর্যটন এলাকার জন্য।

এদিকে, রেলের গত একবছরের বিভিন্ন সাফল্যের কথা এদিন তুলে ধরেন কে.এস জৈন। জানান, আগামী মার্চ মাসের শুরু থেকেই কোচবিহার থেকে নিউ জলপাইগুড়ি বৈদ্যুতিক ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। ইতিমধ্যে সফলভাবে ট্রায়াল রান শেষ হয়েছে। নিউ আলিপুরদুয়ার থেকে নিউ জলপাইগুড়ি ডবল লাইনের কাজ মার্চের মধ্যেই শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পুর্ন হবার কথা সেবক-রংপো রেলপথ। দুটি ট্রনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলে দ্রুত এসিটিএস ব্যবস্থা কার্যকর হতে চলেছে। এমনকি কোভিড পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে প্রায় ৫০কিমি বেগে মালগাড়ি চালানো হয়েছে যেখানে দেশের অনান্য প্রান্তে মালগাড়ির এভারেজ স্পীড ২৫-৩০কিমির মত রয়েছে।কোভিড নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে আগামী ৯তারিখ পুনরায় আলিপুরদুয়ার থেকে শিয়ালদাহগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস এবং বামনহাট থেকে শিয়ালদাহগামী উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস দুটি ট্রেন পুনরায় প্রতিদিনের মতই যাত্রা শুরু করবে।এছাড়াও আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের বিভিন্ন কার্যকলাপের বিবরন দেন ডিআরএম সহ উপস্থিত রেল আধিকারিকগন।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here