প্যারাঅলিম্পিক্সে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে সোনা জয়ের রেকর্ড গড়ল অবনী

আমাদের ভারত, ৩০ আগস্ট: টোকিও প্যারাঅলিম্পিক্সে রেকর্ড গড়ল ভারতীয় মহিলা শুটার অবনী লেখারা। শুটিংয়ে ভারতের এটাই প্রথম পদক, একই সঙ্গে প্রথম সোনার পদক। ১৯ বছরের এই খেলোয়াড় মহিলাদের শুটিং রেঞ্জে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল স্ট্যান্ডিং এসএইচ ১ ইভেন্টের ফাইনালে ২৪৯.৬ স্কোর করেছেন। ২০১৮ সালে ডিসেম্বরে ইউক্রেনের খেলোয়াড় ইরিনা শেতনিক একই স্কোর করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। অবনীও একই স্কোর করে এই বিশ্বরেকর্ড স্পর্শ করে অজশ্র প্রসংশা অর্জন করেছেন।

সোমবার দেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছেন তিনি। টোকিও প্যারাঅলিম্পিক্স ২০২০তে যা চতূর্থ। তার আগে রবিবার জাতীয় ক্রীড়াদিবসে প্যারাঅলিম্পিক্সে ভারতকে প্রথম পদক দেয় মহিলা খেলোয়াড় ভাবিনা হাসমুখভাই প্যাটেল। তিনি টেবিল টেনিসে ভারতকে রৌপ্য পদক দেন। পুরুষ হাইজাম্পেও রূপো জিতেছেন নিশাদ কুমার এবং পুরুষ ডিস্কাস থ্রোয়িংএ (এফ ৫২) ব্রোঞ্জ আনেন বিনোদ কুমার। একই বিভাগে (এফ ৫৬) রূপো এনেছেন যোগেশ কাঠুনিয়া। রূপো ও ব্রোঞ্জের পর সোনার জন্য অপেক্ষায় ছিল ভারত। পর দিনই সোনা এল অবনীর হাত ধরে। যদিও এই জয় নিয়ে প্রত্যাশিত ছিল না, কারন যোগ্যতা অর্জন পর্বে অবনী মাত্র ৬২১.৭ স্কোর করে সপ্তম স্থানে শেষ করেছিলেন। ফাইনালের শুরুটাও ভালো হয়নি কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবনীর খেলা আরও উন্নত হয়েছে এবং শেষ রাউন্ডে দুর্দান্ত প্রদর্শন করেন তিনি।

শুধু তাই নয়, তিনি চতুর্থ ভারতীয় যিনি প্যারাঅলিম্পকে স্বর্ণপদক জিতেছেন। তার আগে ১৯৭২ সালে সাঁতারু মুরলীকান্ত পেটকার, ২০০৪ এবং ২০১৬ সালে জাভেলিন থ্রোয়ার দেবেন্দ্র ঝাঝরিয়া এবং ২০১৬ সালে হাই জাম্পার থাঙ্গাভেলু মারিয়াপ্পান সোনা জিতেছিলেন।

তাঁর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁর প্রবল ইচ্ছাশক্তি। সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে তিনি আজ এই স্থান অর্জন করেছেন। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন। প্রাণে বেঁচে গেলেও মেরুদন্ডে জোর আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। তারপরেও তিনি হার মানেননি। অবনীর মতে, খেলাধুলায় তাঁকে উৎসাহ দিয়েছিলেন তাঁর বাবা এবং তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল ২০০৮ সালে সোনাজয়ী ভারতীয় খেলোয়াড় অভিনব বিন্দ্রার বই। এর পর ২০১৫ সালে জয়পুরের জগৎপুরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে শুটিং শুরু করেন। পূর্বে ২০১৯ সালে সর্বশেষ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে তিনি চতুর্থস্থান লাভ করেছিলেন। তবে এটাই তাঁর প্রথম বড় আন্তর্জাতিক পদক।

তার এই কৃতিত্বের প্রশংশায় পঞ্চমূখ প্যারাঅলিম্পিক কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। টুইটারে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন তিনি। অবনীর প্রতি টুইটারে শুভেচ্ছাবার্তা আসছে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও তাঁর এই জয় অন্যান্য খেলোয়াড় সহ সকল দেশবাসীকেই অনুপ্রেরণা দেওয়ার উপযুক্ত উদাহরণ হিসাবে উঠে এসেছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *