পটাশপুরে কেলেঘাই নদীতে মকর সংক্রান্তিতে পুণ্যস্নান করলে সারে রোগ ব্যাধি

আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৫ জানুয়ারি :
মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে হাজার হাজার পূণ্যার্থী কেলেঘাই নদীতে পুণ্যস্নান সারলেন। স্নান শেষে তারা পুজো দিলেন তুলসী চারার মন্দিরে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবংয়ের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে কেলেঘাই নদী। সেই কেলেঘাই নদীর চরে পটাশপুর থানার কোলন্দা গ্রামে অবস্থিত ৫০০ বছরের পুরোনো এই তুলসী চারার মন্দির। 


 
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মধ্যবর্তী অখ্যাত এই জায়গাটির নাম কোলন্দা। কেলেঘাই নদীর চরে পটাশপুর থানার কোলন্দা গ্রামে এই জায়গায় অন্তত প্রায় ৫০০ বছর আগে একটি মন্দির তৈরী করেন গোকুলানন্দ বাবাজি নামে এক সাধু। মন্দিরের চূড়ায় তুলসী গাছের চারা থাকায় এই মন্দিরের নাম তুলসী চারার মন্দির। সারা বছর এই মন্দিরের তেমন গুরুত্ব না থাকলেও পৌষ সংক্রান্তির সময় এখানে হাজির হন হাজার হাজার মানুষ। পুণ্যস্নান উপলক্ষে দুই মেদিনীপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মানুষজন এখানে হাজির হন‌। এমনকি পাশের রাজ্য ওড়িষা থেকেও বহু মানুষ আসেন এই  মন্দিরে। ভোর থেকে শুরু হয় পুণ্যস্নান। বাচ্চা থেকে বুড়ো, পুরুষ থেকে মহিলা সকলে স্নান করে কেলেঘাইয়ের জলে। কয়েক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে চলে স্নান। প্রবল শীত উপেক্ষা করে বহু মানুষ মেতে ওঠেন মন্দিরের দেওয়ালে মাটি দেওয়ার আনন্দে। নদীর চরের একটা উঁচু জায়গায় মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরের দেওয়ালে মাটি দেওয়া একটি পুণ‍্য কাজ বলে মনে করেন পুণ‍্যার্থীরা। পুণ্যার্থীদের সংস্কার এতে রোগ ব্যাধি ভালো হয়, পূরণ হয় মনস্কামনা। সংক্রান্তির পুণ্যস্নান শেষে নদীর মাটি ওই মন্দিরে নিয়ে গেলে হয় অধিক পুণ‍্য ধারণা দীর্ঘদিনের। স্নান সেরে মন্দিরে পূজো দেন সকলে। 

তুলসী চারার মন্দির ঘিরে গড়ে ওঠা মেলা তুলসী চারার মেলা বলেই খ‍্যাত।গোকুলানন্দজীর মন্দির অবস্থিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। আর মেলা বসেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। মাঝে কেলেঘাই নদী। যোগাযোগের জন্য নদীর উপর তৈরি হয়েছে অনেকগুলো অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর, ভগবানপুর, এগরা, ময়না সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং, পিংলা, দাঁতন এলাকার প্রচুর প্রচুর মানুষ শীতের সকালে হাজির হয়েছেন এই মেলায়। মেলা চলবে আগামী ১৫ দিন। মেলা কমিটির সদস‍্যদের দাবি, মেলার বয়স পাঁচশ থেকে সাতশ বছর। গোকুলানন্দজীর মন্দিরের দেওয়ালে মাটি দেওয়ার জন্য বহু মানুষ আসেন। এতে তাদের মনস্কামনা পূরণ হয়। 

প্রাচীন এই মেলায় আসা পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে নিয়োগ করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ সিভিক ভলান্টিয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *