আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৮ মার্চ; জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণে রাজ্য সরকারকে তার নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি করেছে অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (আবুটা)।
আবুটার সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “একসময় জাতীয় শিক্ষানীতির (২০২০) বিরোধিতা করেও গত ১৭ মার্চ রাজ্য সরকার তাকে হুবহু অনুসরণ করে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক স্তরে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করার অভিনব নকশা ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’কে কার্যকর করার জন্য রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেয়। আবার রাজ্য সরকারের জারি করা এক সংশোধনী নির্দেশিকা থেকে জানা গিয়েছে যে তারা তা কার্যকর করার আগে এর সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলিকে খতিয়ে দেখতে চায়। এর জন্য তারা একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে তারা শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, ছাত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কোনও মতামত নিতে চায়নি।
উল্লেখ্য, ইউজিসি এই শিক্ষানীতি কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও পরিকাঠামোর ব্যাপারে কোনো আশ্বাস দেয়নি। এখানেই সরকারের মূল আপত্তি। এটা পরিষ্কার যে এই জনবিরোধী শিক্ষানীতি চালু করতে রাজ্য সরকার অনাগ্রহী নয়। ইউজিসির কাছ থেকে অর্থ ও পরিকাঠামোর আশ্বাস পেলে রাজ্য সরকার তা কার্যকর করে দেবে।
আবুটা জাতীয় শিক্ষানীতির নামে এই বাণিজ্যিক মডেল চালু করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এই যৌথ ‘অভিসন্ধি’কে তীব্র নিন্দা করছে। ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ এবং চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু হলে প্রান্তিক স্তরের ছাত্রদের উচ্চ শিক্ষায় প্রবেশের পথ রুদ্ধ হবে। শিক্ষার গুনমান হ্রাস পাবে।
অর্থ ও পরিকাঠামোর অভাবের অজুহাত নয়, রাজ্য সরকার স্পষ্ট করে বলুক এই শিক্ষানীতি অবৈজ্ঞানিক, শিক্ষা স্বার্থ বিরোধী এবং সর্বাংশে জনবিরোধী। তাই একে চালু করা হবে না। সেইসঙ্গে তারা নিরন্তর ফান্ড কাট বন্ধ করে রাজ্যের বিদ্যামান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করুক। তাহলে বোঝা যাবে রাজ্য সরকার শিক্ষার স্বার্থে এবং জনস্বার্থের পক্ষে। নিত্য নতুন কমিটি না বসিয়ে রাজ্য সরকার এ বিষয়ে তার নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করুক।