সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৩ জুলাই: নরাহারা পূজা উপলক্ষ্যে বনভোজনে মাতলেন পুরুলিয়ার ঝালদাবাসী। প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা এই নোরাহারা পূজা আজও চলে আসছে সাড়ম্বরে। বিশ্ব মহামারি কোভিড ১৯ আবহেও তা অব্যাহত থাকল। পূজো পাঠ, বলিদানের পর চলল হৈ হুল্লোড় মনোরঞ্জন।
পুরুলিয়ার পশ্চিম প্রান্তে, ঝালদা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে এই স্থানটি অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। অরণ্য, পাহাড়, ঝর্ণা সবই মজুত, রয়েছে সেচ দফতরের জলাধার। অখ্যাত এই নির্জন স্থানটি একেবারে দূষণহীন। এই খানেই পাহাড়ের গুহায় বিরাজমান চামুণ্ডা কালী। বহু আগে নরবলি হতো তাই এই স্থানটির নাম নরহারা। উল্টো রথের পরে রাজাদের শুরু করা পূজা আজও চলে আসছে। তবে একটু আলাদা। বর্তমান বংশধররা রাজত্ব আর ক্ষমতা দুটোই হারিয়েছে। রয়ে গিয়েছে বিভিন্ন রীতি রেওয়াজ পূজো অর্চনা। নরহারা স্থানের পাশাপাশি গোপালপুর, অর্জুনডি, চাটানঘুটু, মহুকোদর প্রভৃতি গ্রামের লায়া সম্প্রদায়ের বাহক। তাঁরা পূজো পরিচালনা করেন।
প্রামাণ্য হীন স্থানীয়দের কথা অনুযায়ী এই পূজা কয়েক’শ বছরের। ঝালদার রাজারা করতেন। এখানে মানুষ বলি হতো তাই নাম হয়েছে নরাহারা। প্রতি বৎসর রথের পর এই পূজা হয়। কথিত আছে, এক বুড়ির ছেলে চলে আসে বলির জন্য। ঠিক সেই সময় বুড়ি খবর পেয়ে এই স্থানে পৌঁছে যান এবং ছেলের প্রাণ ভিক্ষা করেন। সেই সময় থেকে নরবলি উঠে যায় এবং রাজারাও পূজা বন্ধ করে দেন। তার পর থেকে গ্রামের লায়ারা পূজা করে আসছেন। দেবী চামুণ্ডার উদ্দেশ্যে ছাগল, ভেড়া বলি হয়। দেবীর উচ্ছিষ্ট এখানেই রান্না করে খাওয়ার আড়ম্ভর বনভোজনের চেহারা নেয়। ঝালদা শহর ছাড়া আশপাশের গ্রাম থেকেও অনেক আসেন পূজা দিতে। রীতি অনুযায়ী ব্যতিক্রম থাকেন মহিলারা।