আদিবাসী বৃদ্ধাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে রণক্ষেত্র তপন, অভিযুক্তর বাড়ি ভাঙ্গচুর, রাস্তা অবরোধ, মাঠে নামলেন মন্ত্রী

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ৭ ফেব্রুয়ারি: বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে এক ষাটোর্ধ আদিবাসী বৃদ্ধাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগকে ঘিরে ধুন্ধুমার তপনের নিশ্চিন্তা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হল অভিযুক্তের বাড়িঘর, চলে ভাঙ্গচুরও। গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজ্য সড়ক অবরোধ আদিবাসীদের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মাঠে নামতে হয় মন্ত্রীকেও। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের হরসুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিশ্চিন্তা এলাকায় এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় মাঠে নামতে হয় এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদাকে। পুলিশ ও মন্ত্রীর যৌথ আশ্বাসে আদিবাসীরা অবরোধ তুললে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

তপন থানার ওসি সৎকার সাংবো জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিচারক ধৃতের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় তপনের হরসুরা পঞ্চায়েতের নিশ্চিন্তা এলাকায় এক আদিবাসী পরিবারে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাজ চলছিল। সেই উপলক্ষ্যে পরিবারের প্রায় সকলেই মাঠে গিয়েছিল। সেই সময় বাড়িতে উনুনের পাশে একটি খড়ের গাঁদায় বসেছিলেন বেড়াতে আসা ষাটোর্দ্ধ এক বৃদ্ধা মহিলা। অভিযোগ, সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী যুবক অচিন্ত্য বর্মন মদ্যপ অবস্থায় ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে বাড়িতে থাকা অপর এক মহিলা চিৎকার করলে তাঁকেও মারধর করে ওই যুবক বলে অভিযোগ। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসতেই অভিযুক্ত যুবক দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে বাড়িতে আশ্রয় নেয়। যার পরেই উত্তেজিতরা বেপরোয়া ভাঙ্গচুর চালায় অভিযুক্তের বাড়িতে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় অভিযুক্তর বাড়ির দরজা-জানালা। যার পরেই অভিযুক্তের গ্রেপ্তারের দাবিতে ফুলবাড়ি-তপন রাজ্য সড়ক অবরোধ করে দীর্ঘরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন আদিবাসীরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এলাকায় ছুটে যান প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। অবশেষে রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে তপন থানার পুলিশ। স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। শুক্রবার ধৃত যুবককে বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

নির্যাতিতা বৃদ্ধার আত্মীয় আক্রান্ত মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী মারা যাবার কারণে তাঁদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন জ্যেঠিমা। ফাঁকা বাড়িতে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে মদ্যপ ওই যুবক। যা দেখতেই তাকেও মারধর করেছে সে। তিনি চান অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি।

প্রতিবেশী চরণ সরেন জানিয়েছেন, এমন ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি। পুলিশ প্রশাসনকে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অভিযুক্তের মা সুমিত্রা বর্মন জানিয়েছেন, মিথ্যে ঘটনা। তাঁর ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। ওই এলাকায় মদ খেতে যেত অচিন্ত্য বর্মন। সেই সুযোগকেই কাজে লাগানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রাতে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনার খবর পাবার পরেই সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *