কলকাতায় চলন্ত বাসে মহিলার গায়ে ছিটকে এল আঠালো পদার্থ, ধৃত বেলেঘাটার যুবক

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৩ জানুয়ারি: দিনের বেলায় চলন্ত বাসেও যেন নিরাপদ নয় মহিলারা। হেদুয়া, সার্ভে পার্কের পর ফের অশালীন ঘটনার সাক্ষী থাকল মহানগর। ভিড় বাসে এক যুবকের বিকৃত মানসিকতার শিকার হলেন এক তরুণী। বিকৃতমনস্ক গৌরব দে নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেলে ইএম বাইপাসে। পুলিশকে তরুণী জানিয়েছেন, একটি ভিড় বাসে বসে থাকা তরুণীর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিলেন অভিযুক্ত যুবক। বাসে ভিড় থাকার সুযোগে মেয়েটিকে ধাক্কাও মারছিলেন। রবিবার বিকেলে বারাসাত-বারুইপুর রুটের বাসে বান্ধবীকে নিয়ে উঠেছিলেন গড়িয়ার ওই যুবক। বাসের পিছনের আসনে বসেছিলেন যুবক। দরজার সামনেই বসেছিলেন তাঁর বান্ধবী। মেট্রোপলিটন স্টপেজ আসতেই চিৎকার করে ওঠেন তরুণী।

দেখা যায়, তরুণীর সোয়েটারের হাতায় আঠালো কিছু পড়ে রয়েছে। দৌড়ে বাস থেকে নামতে যায় অভিযুক্ত যুবক। কিন্তু তার আগেই তাকে ধরে ফেলেন অন্যান্য যাত্রীরা। হতভম্ব তরুণী দেখেন, তখনও দাঁড়ানো ওই যুবকের প্যান্টের জিপার খোলা, গোপনাঙ্গ বেরিয়ে রয়েছে! কি হয়েছে তার বুঝতে দেরি হয়নি।

সামনেই ছিল বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ডের অফিস। খবর পেয়ে আসেন সার্জন অনুপম মাঝি। তাঁর কথায়, “সাধারণত রাস্তায় হেলমেট না পরলে, কেউ গতির ঊর্ধ্বসীমা না মানলে জরিমানা করি। তেমন কিছু ভেবে দৌড়ে এসেছিলাম। ভিড় বাসে এমন জঘন্য অপরাধ হয়েছে ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠছে।”
জেরায় অভিযুক্ত গৌরব জানিয়েছে, বেলেঘাটা জোড়ামন্দির এলাকায় বাড়ি। বাবা অটো চালায়। স্থানীয় ওষুধের দোকানে কাজ করে গৌরব।

এমন ঘটনা সামনে আসার পরই হতচকিত শহর কলকাতা। তবে কলকাতার বুকে এই ঘটনা নতুন নয়, এর আগে চলন্ত বাসে এই ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছে তরুণীরা। মনোবিদরা বলছেন, চমকে যাওয়ার কিছু নেই। এটা একটা মানসিক অসুখ। ইনস্টিটিউট অফ মনোবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ইগো বাউন্ডারি। কিন্তু এই অভিযুক্ত গৌরব দে ইগো বাউন্ডারি পেরিয়ে গিয়েছে। এমন কাজ যারা করে, নারী তাদের কাছে যৌনতার উপকরণ মাত্র। শহর কলকাতা এমন ঘটনা আগেও দু’বার ঘটেছে। এটা এই নিয়ে তৃতীয়বারের ঘটনা। বর্তমানে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় যে কোন জায়গায় গিয়েছে, এই ঘটনাগুলি যেন তার প্রমাণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *