আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১৫ সেপ্টেম্বর: দীর্ঘ ২১ মাস পর ফের মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু হল মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের মুজনাই চা-বাগানে। পুনরায় কাজ ফিরে পেলেন চা-বাগানের প্রায় ১০০০জন শ্রমিক। দীর্ঘদিন আর্থিক অনটনে দিন কাটানোর পর আজ সকাল সকালই আনন্দে আত্মহারা শ্রমিকরা। প্রচন্ড বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে যথা সময়ে বাগানের ফ্যাক্টরির সামনে হাজির হয়ে যান তারা। বাগানের শ্রমিকদের সাথে সকালেই বাগানে আসেন স্থানীয় মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিজ্ঞা। আসেন চা-বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের নেতা উত্তম সাহা, ডুয়ার্স চা-বাগান ওয়াকার্স ইউনিয়নের সভাপতি গোপাল প্রধান, সিটু নেতা রবীন রাই, কংগ্রেস নেতা মনি কুমার ডার্নাল। প্রত্যেকেই চা-বাগানটি খুলে যাওয়ায় খুশি ব্যক্ত করেন।একইসাথে আসন্ন দুর্গাপুজোর আগে চা-বাগানটি খুলে দেবার জন্য মালিকপক্ষকেও ধন্যবাদ জানান।
এদিকে এদিন সকালে চা-বাগান খোলার চুক্তির বিষয়গুলি নিয়ে উপস্থিত শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়। তারপরেই শ্রমিকরা নিজ নিজ কাজে যোগ দেন। বাগানের এক মহিলা শ্রমিক কালি লোহার জানান,”দীর্ঘ ২১ মাস প্রচন্ড আর্থিক অনটনে ছিলাম। তবে বাগানটি পুনরায় খোলায় আর্থিক সমস্যার কিছুটা সমাধান হল। আমরা সকলেই খুশি। আমরা চাই আমাদের বাগান যাতে আর বন্ধ না হয়।
“বিধায়ক মনোজ টিজ্ঞা জানান,”সামনের দুর্গাপুজো।ঠিক তারপরেই চা বাগানগুলিতে লিজ পিরিয়ড শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু তা সত্বেও মালিকপক্ষ যেভাবে শ্রমিকদের কথা ভেবে চা-বাগান খুলেছে তাতে মালিকপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আজ থেকে বাগানে কাজ শুরু হল।আমরা চাই বাগানটি সুষ্ঠুভাবে চলুক। আরও যে বন্ধ চা-বাগানগুলি রয়েছে সেগুলি দ্রুত খোলার ব্যাবস্থা করুক সরকার।”
চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের নেতা উত্তম সাহা বলেন,”বাগান খোলায় আমরা খুশি। আমরাই শ্রমিকদের স্বার্থে বাগান খোলার ব্যাপারে প্রতিনিয়ত দরবার করে ছিলাম।”
এদিন বিকেলে বাগানে পৌছান চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেসের মজদুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা। তিনি বলেন, বাগান খোলার ব্যাপারে আমরা রাজ্য সরকারের শ্রম মন্ত্রীর সাথে প্রতিনিয়ত আলোচনা চালিয়েছিলাম। শ্রমিকদের দাবি, লেবার কমিশনে উত্থাপন করেছি। সেই মত আজ বাগানে কাজ শুরু হয়েছে। এদিনই বাগানের বীর শহিদ গঙ্গা বারহার মাকে সম্বোর্ধিত করা হল। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এখানে বীর শহিদের একটি স্মৃতি সৌধ স্থাপন করা হবে। তবে বাগানটি যেন আর বন্ধ না হয় সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি থাকবে।”