
আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগনা, ২৪ ফেব্রুয়ারি:
দীর্ঘ ১৫ বছর পর গোবরডাঙ্গা জেলা পরিষদ পরিচালিত গ্রামীণ হাসপাতাল এবার পুর দপ্তরের হাতে হস্তান্তর করা হল। সামনেই পুরসভার ভোট। তার আগে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা পরিষেবা চালু করতে পদক্ষেপ নিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ। বিরোধী দলগুলির অবশ্য বক্তব্য, এটি নির্বাচনী চমক ছাড়া কিছু নয়।
সোমবার সেই হাসপাতালে আসেন এডিএম(ডি) শঙ্কর প্রসাদ পাল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিনা মন্ডল, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর মনোজ রায়, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যখ নারায়ণ গোস্বামী এবং অন্যান্য আধিকারিকরা। তারা হাসপাতাল ঘুরে দেখেন এবং পরিকাঠামোর কি কি খামতি আছে সেগুলো খোঁজ নেয়। হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ রূপে চালুর দাবিতে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পৌর উন্নয়ন পরিষদের কর্মকর্তারা ২০১৪ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন করে আসছেন। জেলা পরিষদ ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে বার কয়েক। অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। নিয়মিত সভা-মিছিল করা হয়।
পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে হাসপাতালের রোগী ভর্তির ব্যবস্থা বা ইনডোর বিভাগ। ধীরে ধীরে চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে। এখন একমাত্র চিকিৎসক সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন কয়েক ঘণ্টা আউটডোরে রোগী দেখেন। সরকারি ছুটির দিন তাঁকে পাওয়া যায় না। অতীতে হাসপাতালে ৩০টি শয্যা ছিল। সর্বক্ষণ চিকিৎসক-নার্স থাকতেন। অপারেশন থিয়েটার ছিল। যন্ত্রপাতি ছিল। ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হত। প্রসূতিদের স্বাভাবিক প্রসবও হত। হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স ছিল। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের থাকার জন্য কোয়ার্টার ছিল। এক্স রে, প্যাথোলজি, নেবুলাইজার-সহ নানা পরিষেবা পাওয়া যেত। পানীয় জলের ব্যবস্থা ছিল। হাসপাতালে আলাদা হোমিওপ্যাথি বিভাগ ছিল। লোকসভা ভোটে গোবরডাঙায় এ বার শাসক দলের ভরাডুবি হয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এর পিছনে আছে হাসপাতাল নিয়ে মানুষের ক্ষোভ। বিজেপির তরফে সম্প্রতি হাসপাতাল চালুর দাবিতে সাত দিনের অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, বাম জমানায় বন্ধ হয়। ১৫ বছর বন্ধ ছিল এই হাসপাতাল। গোবরডাঙ্গার মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে হাসপাতাল শীঘ্রই খুলে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১০ বেডের হাসপাতাল হবে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। যোগ দেবেন ৪ জন চিকিৎসক। পরবর্তীকালে ধাপে ধাপে আরও পরিষেবা বাড়ানো হবে।