তৃণমূল জমানায় ৪র্থ অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদত্যাগ, কিশোর দত্তের পদত্যাগের কারণ নিয়ে জলঘোলা

আমাদের ভারত,১৪ সেপ্টেম্বর: রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কিশোর দত্ত। এই নিয়ে তৃণমূল আমলে চতুর্থ অ্যাডভোকেট জেনারেল পদত্যাগ করলেন। ফলে এই পদত্যাগ নিয়ে তুমুল জলঘোলা চলছে। দিলীপ ঘোষ এপ্রসঙ্গে বলেছেন, তৃণমূল যে বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে তা আবার প্রমানিত হয়ে গেল।

মঙ্গলবার রাজভবনে রাজ্যপাল জাগদীপ ধনখড়, নবান্নে আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং মুখ্যসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন কিশোর দত্ত। সেই পদত্যাগ গ্রহণ করেন রাজ্যপাল। কিছুক্ষণ পরেই নতুন অ্যাডভোকেট জেনারেল নিয়োগ করে রাজ্য।

বহুদিন ধরে অ্যাডভোকেট জেনারেল পদে ছিলেন কিশোর দত্ত। আচমকাই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সেই পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। ইস্তফাপত্র তিনি লিখেছেন,”ব্যক্তিগত কারণে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। আমার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হোক। পশ্চিমবঙ্গের অ্যাডভোকেট জেনারেল পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।”

ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রাজ্যে প্রতিনিধি হিসেবে মামলা সামলেছেন তিনি। প্রায় সাড়ে চার বছর দায়িত্ব সামলানোর পর আজ অ্যাডভোকেট জেনারেল পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কিশোর দত্ত।‌ তৃণমূল জমানায় এই নিয়ে চার জন অ্যাডভোকেট জেনারেল পদ ছাড়লেন। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জয়ন্ত মিত্রের পর দায়িত্ব সামলা চ্ছিলেন কিশোর দত্ত।

২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র এই পদে ছিলেন। তিনি ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর হাইভোল্টেজ পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে যখন তোলপাড় হচ্ছে তখন এই পদ থেকে ইস্তফা দেন আইনজীবী বিমল চট্টোপাধ্যায়। এরপর এই দায়িত্বে আসেন জয়ন্ত মিত্র। তিনিও এই পদে এক বছর কাটাতে পারেননি। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন কিশোর দত্ত।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন মামলায় কিশোর দত্তকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। কিন্তু বেলা গড়াতেই হঠাৎ পদত্যাগের সিদ্ধান্তে হতচকিত হয়ে যায় হাইকোর্টের আইনজীবী মহল।

এই ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, তৃণমূল বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে তা আরো একবার প্রমাণ হয়ে গেল। তাঁর কথায়, “এর আগেও অ্যাডভোকেট জেনারেল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ওনাকে নিজে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই যোগ্য ব্যক্তিরা এই সরকারের সঙ্গে কাজ করতে পারছেন না। একাধিক আইনজীবী আধিকারিক ও বিচারপতি বারবার তৃণমূলের মামলার সঙ্গে যুক্ত হতে অস্বীকার করছেন ও দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *