আমাদের ভারত, মুর্শিদাবাদ, ১২ জানুয়ারি: ফের বেসুরো হলেন তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবির। তৃণমূলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হুমায়ুন কবীর।
মঙ্গলবার বহরমপুরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিতে আমি দ্বিতীয় বারের জন্য ৬ মার্চ বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলাম। জেলা সভাপতি আবু তাহের খান ও জেলা কো-অডিনেটর উপস্থিতিতে আমি তৃণমূলে যোগদান করি, কিন্তু যোগদান করলেও দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে আমাকে ব্যবহার করছে না জেলা সভাপতি আবু তাহের খানের নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস।
তিনি বলেন, কোনও মন্ত্রী বা উচ্চ পদস্থ নেতৃত্ব এলেও আমাদের ডাকা হয় না কোনও দলীয় অনুষ্ঠানে। দীর্ঘদিন ধরে আমাকে বসিয়ে রাখা হচ্ছে, কোনও কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নিজেই এই জেলায় একা দল করছেন, আর কেউ দল করছে না বলে তিনি মনে করছেন। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে নিয়েছে এখানে জেলা নেতৃত্ব ইচ্ছা বা অনিচ্ছা ব্যাপার নেই। রেজিনগর বিধানসভাতে আমি কোনও কর্মসূচি পালন করতে পারছি না, তার জবাব জেলা সভাপতিকে দিতে হবে। জেলা সভাপতি কি মনে করছেন তিনি একাই অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোকাবিলা করবেন? তার ওত ক্ষমতা নেই আমাদের ছাড়া কংগ্রেস সাথে মোকাবিলা করা।
এব্যাপারে আবু তাহের খান জানান, হুমায়ুন কবীর যখন বাইরে ছিল তখনঈ রেজিনগরের তৃণমূল নেতৃত্ব ভোট করেছে। রবিউল আলম চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির এই দুজনের মধ্যে এখন লড়াই চলছে, কে প্রার্থী হবে এই নিয়ে। আর প্রার্থী ঠিক করা তো আমাদের হাতে নেই, এটা দল সিদ্ধান্ত নেবে। বর্তমানে রেজিনগর বিধায়ক আছেন রবিউল আলম চৌধুরী। তিনি যখন এলাকায় দলীয় সভা করেছেন তার পাল্টা আরও একটি সভা করা হয়েছে, যার জেরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চাই না হুমায়ুন কবির নিয়ে নতুন করে রেজিনগরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হোক, বলে পাল্টা মন্তব্য করেন আবু তাহের খান ।
একদা শাসক দলের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর ১৯৮২সালে রাজনীতি করছেন মুর্শিদাবাদ জেলাতে, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কংগ্রেস করে আসছেন অধীর ছায়া সঙ্গী বলে পরিচিত হুমায়ুন কবীর। ২০১১সালে কংগ্রেসের টিকিটে রেজিনগর থেকে প্রথম বিধায়ক নির্বাচিত হন, অধীর চৌধুরী সাথে দুরত্ব তৈরি করে ২০১২সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন মন্ত্রী হন হুমায়ুন। তবে ছয় মাস মন্ত্রী থাকার পর উপ নির্বাচনে অধীর চৌধুরী প্রার্থী রবিউল আলম চৌধুরী কাছে পরাজিত হন হুমায়ুন কবীর। এরপরই তৃণমূল সাথে দুরত্ব তৈরি হয় দল বিরোধী কাজের জন্য শোকজ করে শাসকদল এবং পরে অধীর চৌধুরী চৌধুরী হাত ধরে পুনরায় কংগ্রেস ফিরে আসেন হুমায়ুন। পরবর্তীতে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে আগে বিজেপি তে যোগদান করেন, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে হুমায়ুন কবির প্রার্থী হন সংখ্যালঘু ভোট টানতে। কিন্তু তিনি তৃতীয় স্থান দখল করেন। বিজেপি ছেড়ে ৬ই আগষ্ট ২০২০ তৃণমূলে পুনরায় দ্বিতীয় বারের জন্য যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি শাসকদল তৃণমূলের কর্মী, তাহলে কি আগামী দিনে পুনরায় দল পরিবর্তন করতে চলেছেন হুমায়ুন কবির সেই প্রশ্ন এখন মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনৈতিক মহলে।