কড়া পদক্ষেপ পেট্রাপোল বন্দরে, আমদানি রফতানি বন্ধ করলেন এজেন্টরা

আমাদের ভারত, বনগাঁ, ২৬ ফেব্রুয়ারি: ফরওয়ার্ডিং এজেন্টদের আন্দোলনের জেরে বন্ধ হয়ে গেল পেট্রাপোল বন্দরের সীমান্ত বাণিজ্য। বাণিজ্যের কাজে এদেশের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যদের বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরে অবাধে যাতায়াতের উপরে বিএসএফ নিয়ন্ত্রণ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন ফরওয়ার্ডিং এজেন্টরা। যার জেরে মঙ্গলবার বিকেল থেকে আমদানি-রফতানির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিএসএফের দাবি বৈধ কাজপত্র ছাড়া অবাধে বেনাপোলে যাতায়াত করা যাবে না।

ক্লিয়ারিং এজেন্টদের সভাপতি কাত্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাদের সংগঠনের সদস্যেরা বেনাপোলে গিয়ে বাংলাদেশ শুল্ক দফতর থেকে গাড়ির পাস এনে ট্রাক চালকদের দেন। তবেই চালকেরা পণ্য নিয়ে বেনাপোলে ঢোকেন। আবার বিকেলে পণ্য খালাস হয়ে গেলে আমরা ও দেশের শুল্ক দফতর থেকে ‘সাইনইন ভয়েস’ নিয়ে আসার কাজ করি।” তাঁর বক্তব্য, “মঙ্গলবার সকাল থেকে বিএসএফ বৈধ কাগজ ছাড়া বেনাপোলে ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে এ দেশের ট্রাকচালক ও খালাসিরা বেনাপোলে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।” বিএসএফের এই হিতকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবারে ও কার পাসের জটিলতা না কাটা পর্যন্ত একটি ট্রাকও বাংলাদেশে যাবে না। আন্দোলনকারীদের দাবি বৈধ কাগজ করতে সময় দেওয়া হোক।

শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বৃহতম স্থলবন্দর পেট্রাপোল দিয়ে সোনা পাচারের ঘটনার বেশ কিছু প্রমাণ মিলেছে। সোনার বাট ও বিস্কুট-সহ কয়েক জন পাচারকারীকে বিএসএফ এবং শুল্ক দফতর হাতেনাতে পাকড়াও করেছে। তাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, দুবাই থেকে সোনার বিস্কুট নিয়ে ঢাকা হয়ে বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ওই সকলে এ দেশে ঢুকেছে। জানা যাচ্ছে, সোনার বিস্কুট-সহ ধরা পড়া পাচারকারীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জনও ছিলেন। বাংলাদেশের ক্লিয়ারিং এজেন্ট ও এ দেশের ফরওয়াডিং এজেন্টও গ্রেফতার হয়েছিলেন। যা আরও বেশি উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছেন বিএসএফ আধিকারিকেরা। কারণ, এই সব ব্যক্তি বাণিজ্যের কারণ দেখিয়ে দু’দেশের মধ্যে অবাধে যাতায়াত করেন। অনেকেরই সরকারি বা সরকার অনুমোদিত বৈধ পরিচয়পত্র নেই।

ওই ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেন বিএসএফ এবং শুল্ক দফতরের কর্তারা। এরপরেই বাণিজ্যিক কারণে দু’দেশের মধ্যে এজেন্টদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্যোগী হয় বিএসএফ। আন্দোলনকারীদের দাবি, ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রক তাঁদের যাতায়াতের উপরে শিলমোহর দেয়। তারপর থেকেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে।

তাঁর দাবি, তাঁদের সংগঠনের কোনও সদস্য সোনার বিস্কুট নিয়ে ধরা পড়েননি। তাঁরাও চান, দেশের স্বার্থে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হোক। কিন্তু দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন। শুল্ক দফতর অবশ্য জানিয়েছে, সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে, কিন্তু তা বাণিজ্য বন্ধ করে নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *