অগ্নিবীর! মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে সুকান্ত বললেন, রাজ্যের সিভিক পুলিশ নিয়োগ আসলে শ্রম শোষণ

আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৮ জুন: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। অগ্নিবীরদের চাকরি শেষে ৪ বছর পর রাজ্য সরকার অধিনস্ত সংস্থায় চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রসঙ্গকে কেন্দ্রের ডাস্টবিন বলেছেন। তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতি বাদ করে সুকান্ত মজুমদার রাজ্যের সিভিক পুলিশ নিয়োগকে রাজ্য সরকার দ্বারা শোষণ বলে দাবি করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম বর্ধমানে দলের কর্মী সভায়, অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরব হন। এক কর্নেল তাঁকে অবসর প্রাপ্ত অগ্নিবীরদের রাজ্য সরকারের চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন বলে জানান তিনি। এর বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তার কথায় “ওদের পাপ আমি নেবো না। চাকরি দিলে আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েদের দেব। তোমাদের পাপ আমি নেবো কেন? আপনার ডাস্টবিন আমাদের ওয়াশিং মেশিনে নেব না।” মমতার দাবি, ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এই অগ্নিপথ প্রকল্পটি আসলে বিজেপির বুজরুকি।

আজ সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, “মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় সেনা সম্পর্কে যে ধরনের শব্দ চয়ন করেছেন আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।” তিনি মনে করিয়ে দেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও যখন আমাদের সেনা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল সেই সময়ও তাদের যোগ্যতা এবং তাদের সততার ওপরে বারবার প্রশ্ন করেছিলেন।” সুকান্ত মজুমদার বলেন, “ভারতীয় সেনার প্রতি তাঁর যে মন্তব্য, তাতে তিনি পশ্চিমবঙ্গ নামক কোনও অঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নন, তাঁকে পাকিস্তানের কোনও প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে হয়।”

অভিযোগের সুরে বিজেপি সভাপতি বলেন, “তিনি বারবার ভারতীয় সেনা নিয়ে প্রশ্ন করেন, কিন্তু আজ অব্দি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নিয়ে কোনও প্রশ্ন করেছেন কিনা বা কোনও কথা বলেছেন কিনা আমার জানা নেই।”

একই সঙ্গে অগ্নিবীরদের অবসরের পর কাজে নিয়োগ প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জানেন না, বিভিন্ন রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, তারা অগ্নিবীরদের সরকারি সংস্থার চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদান করবে। যেমন অসম রাইফেলসে, অসম পুলিশে অসম সরকার তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে।

সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, “সেনাবাহিনীর শিক্ষায় শিক্ষিত ২১ বছর বয়সের যুবক যার হাতে প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা থাকবে, সেই টাকা নিয়ে যখন সে বেরোবে, তারা আর যাই হোক দেশের কাছে আবর্জনা বা ডাস্টবিন হতে পারে না।”

তৃণমূল সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি পাল্টা দিয়ে বলেন, “বরঞ্চ মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর ভাবা উচিত, তিনি ৯ হাজার ১০ হাজার টাকা দিয়ে কিভাবে তার রাজ্যের বেকার যুবকদের, নিজের দলের কিছু ক্যাডারকে সিভিক পুলিশ বানিয়ে তাদের শ্রমশোষণ করছেন।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “সিভিক পুলিশ যখন অবসর নেবেন তখন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কত টাকা দেবেন? অগ্নিবীরের থেকে বেশি টাকা দেবেন কি? আগে তিনি দিন বা দিতে বলুন তারপর তাঁর প্রশ্ন করা সাজে। তার আগে এই প্রশ্ন করার অধিকার তাঁর নেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *