বিপদের আঁচ পেয়ে দুপুরেই পুলিশকে ম্যাসেজ ঐশীর, তবু পুলিশ এল দুষ্কৃতীদের তান্ডবের শেষে অভিযোগ ছাত্রনেত্রীর

আমাদের ভারত, ৬ জানুয়ারি:রবিবার সন্ধ্যে যে তান্ডব চলছে জেএনইউ ক্যাম্পাসে তার অশনিসংকেত পাওয়া গিয়েছিল দুপুর আড়াইটে নাগাদ। তখনই দিল্লি পুলিশকে মেসেজ করে আসন্ন বিপদের কথা জানিয়েছিল জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। কিন্তু বিপদ আটকানো যায়নি। পুলিশ যখন জেএনইউ ক্যাম্পাসে এসেছে তখন দুষ্কৃতীদের তান্ডব লীলা শেষ পর্যায়।

মুখ ঢাকা দুষ্কৃতীদের হামলায় ঐশীসহ একাধিক পড়ুয়া গুরুতর জখম। বাদ যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপিকারা। জানা গেছে ঐশীর মাথায় ১৫-১৬ টা সেলাই পড়েছে। হাতে মাথায় মারাত্মক ব্যথা। ঐশীর দাবি লোহার রড দিয়ে যেভাবে তাকে আঘাত করা হয়েছে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে তার মাথায় প্রচুর রক্ত ঝরেছে। হাতেও লেগেছে গুরুতর চোট। মুখ ঢেকে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কিছু ঠাহর করার আগেই ঘটেছে পুরো ঘটনা। কিন্তু বিপদের আশঙ্কা আগেই ছিল। সেই জন্য পুলিশকে সে খবর দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এবিভিপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ঐশী বলেন, এই গুন্ডা সংস্কৃতি জেএনইউর নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যেত। ক্যাম্পাসের ভেতরে কিভাবে বাইরের লোক ঢোকে? কিভাবে রড সহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে দুষ্কৃতীরা? প্রশ্ন তুলেছেন ঐশী।

এই ঘটনায় উপাচার্য এম জগদেশ কুমারের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করে ঐশী বলেছেন, হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরে বেড়াচ্ছে, উপাচার্য দুষ্কৃতীদের মদত দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে উপাচার্য যে ব্যর্থ তা স্পষ্ট হয়েছে, নিজের দায় স্বীকার করে তার ইস্তফা দেওয়া উচিত।

অন্যদিকে জেএনইউতে হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন উপাচার্য জগদেশ কুমার। এই ঘটনার জন্য তিনি পাল্টা দায়ী করেছেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদেরকেই। তার কথায় বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদেরই কৃতকর্মের ফল এটা। গতকালের ঘটনার নিন্দা করে একের পর এক টুইট করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি জানিয়েছেন জেএনইউ ক্যাম্পাসে এই ধরনের ঘটনা নিন্দা জনক। আহত ছাত্র ছাত্রীদের প্রতি তার সমবেদনা রয়েছে। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার স্পষ্ট বার্তা, যারা বিশ্ববিদ্যালয় কাজকর্মে সহযোগিতা করছেন তাদের পাশেই শুধুমাত্র থাকবে কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের দাবি কিছু বিক্ষোভকারী পড়ুয়া হিংসা ছড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কাজে বাধা সৃষ্টি করেছে। পরীক্ষার জন্য নাম নথিভুক্তকরনে ইচ্ছুক যারা তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আর সেই কারণেই এই বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জেএনইউ ঐতিহ্য ভেঙে গুন্ডাগিরি চলেছে। কোনোভাবেই এই ধরনের আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। দোষীরা শাস্তি পাবে। জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের গুন্ডাদের আখড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। জে এন ইউর হামলাকে বিজেপিও এভাবেই ব্যাখ্যা করেছে। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকার ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। দেশের বিরোধীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তিনি দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে হিংসার পরিবেশ তৈরি করেছে বিরোধী দলগুলি। এদিকে বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ দিল্লি নির্বাচনকে মাথায় রেখে অপপ্রচার চালাচ্ছে শাসকদল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *