কাঁকসায় পুকুরে বিষ মেশানোর অভিযোগ, লক্ষাধিক টাকার মাছ নষ্ট, মাথায় হাত ব্যবসায়ীর

জয় লাহা, দুর্গাপুর, ৯ জুন: রাতের অন্ধকারে পুকুরে বিষ মেশানোর অভিযোগ। আর তাতেই নষ্ট হল কয়েক লক্ষ টাকার চারা পোনা। লকডাউনের বাজারে মাছ বিক্রি করতে এসে মাথায় হাত ব্যবসায়ীর। বুধবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে, কাঁকসার দার্জিলিং মোড় সংলগ্ন প্রয়াগপুরে। ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, দুষ্কৃতীদের অসৎ উদ্দেশ্যে। 

   প্রসঙ্গত, বর্ষার আগে বীরভুমের লাভপুর থেকে কয়েকজন ব্যবসায়ী কাঁকসা, পানাগড়, গলসীতে মাছের চারা বিক্রি করতে আসেন। কাঁকসার দার্জিলিং মোড় সংলগ্ন প্রয়াগপুরে বেশ কয়েকটি পুকুরে আড়ত তৈরী করে। জলের মধ্যে মশারীর ঘেরা দিয়ে চারা মাছগুলি ছেড়ে রাখেন। সেখান থেকে আশপাশের গ্রামে বিক্রি করতে যান। আবার কেউ সরাসরি পুকুরে ছাড়ার জন্য ওখান থেকে মাছ কিনে নিয়ে যায়। এরকমই একটি পুকুরে মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে আচমকা মাছের চারা মরতে শুরু করে বলে অভিযোগ। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ওই পুকুরে আড়ত করা ব্যাবসায়ী।

সকাল হতেই ততক্ষনে সব শেষ। মশারী ভর্তি শুধু মরা মাছ। শুধু তাই নয়। পুকুরে থাকা মাছও মরে ভেসে ওঠে। ক্ষতিগ্রস্ত মাছ ব্যাবসায়ী পল্টু তপাদার জানান, “বিগত ১৬-১৭ বছর ধরে মাছের চারা বিক্রি করতে আসছি। কখনও এরকম ঘটনা ঘটেনি। পুকুর ব্যাবহারের জন্য মালিকের সঙ্গে মরশুমে একটা চুক্তি হয়। এবারও হয়েছিল। গত একমাস আগে চলতি মরশুমে এসেছি। ধার দেনা করে ব্যাবসা করছি। মঙ্গলবার বীরভুমের ফার্ম থেকে ২ কুইন্টাল গ্রাসকাপ ও প্রায় ৪ কুইন্টাল আমেরিকান রুই নিয়ে এসেছি। গভীর রাত থেকে আচমকা মাছ মরতে শুরু করে। সকাল পর্যন্ত মশারীর মধ্যে সব মাছ মরে ভেসে ওঠে।”

তিনি বলেন,” পুকুরে কেউ বিষ ঢেলে দিয়েছে। তাতেই সব মাছ মরেছে। প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার মাছ নষ্ট হয়েছে। কিভাবে ধার দেনা শোধ করবে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি।” এছাড়াও পুকুরে ছাড়া মালিকের প্রায় লক্ষাধিক টাকার মাছ মরেছে বলে অভিযোগ। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, কে বা কারা এধরনের নৃশংস কাজ করল? কি উদ্দেশ্য ছিল? উল্লেখ্য, গত মাস খানেক ধরে দার্জিলিং মোড় এলাকায় নির্বিচারে পুকুর ভরাট চলছে। ছাই মাটি দিয়ে পুকুর ভরাট করে অবাধে চলছে প্রমোটারি। প্রশ্ন, তাহলে কি মাছ ব্যাবসায়ী ও পুকুর মালিককে ভয় দেখানোর জন্য জমি মাফিয়াদের প্রয়াস? পুকুরে বিষ মেশানো আইনত অপরাধ। তাতে মাছ ছাড়াও পুকুরের অন্যান্য জলজ প্রানী মারা পড়ে। ফলে পুকুরের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। যদিও কাঁকসা বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য জানান,” লিখিত কোনও অভিযোগ আসেনি। তবুও খোঁজ নিয়ে দেখছি।” 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *