জনধন একাউন্ট চালু করার জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদীয়া, ২৩ এপ্রিল:
ভারত সরকার যখন জনধন অ্যাকাউন্টে গরিব দুঃস্থ মানুষদের টাকা দিচ্ছে তখন নদীয়ার মদনপুরের এক ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে বন্ধ অ্যাকাউন্ট চালু করার জন্য গ্রাহকদের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল।

ভারত সরকার যখন জনধন একাউন্টে গরিব মানুষদের টাকা দিচ্ছে সেই সময় নদীয়ার মদনপুরের জঙ্গলগ্রামে শরিফ মন্ডলের ফ্র্যাঞ্চাইজিতে বহু গরিব মানুষ বন্ধ একাউন্ট চালু করা জন্য আসেন। জনধন একাউন্ট যখন হয়েছিল তখন অনেকেই একাউন্ট করেছিলেন। কিন্তু সেই একাউন্টে অনেকেই টাকা পয়সা লেনদেন করেননি। তার জন্য তাদের অ্যাকাউন্ট এখন চালু নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই সময় প্রত্যেকে তিন মাস ধরে ৫০০ টাকা দেবেন। অনেকে টাকা পেয়েও গেছেন। কিন্তু যাদের বই চালু নেই যারা কোনও লেনদেন করেননি তাদের টাকা আসেনি। তারা তখন যোগাযোগ করেন শরিফ মন্ডলের ফ্র্যাঞ্চাইজিতে। অভিযোগ, সেই সময় তাদের কাছে বন্ধ বই চালু করার জন্য দেড়শ টাকা দাবি করে। অনেকেই টাকা দেন।

মদনপুর অঞ্চলের তৃণমূলের যুব সভাপতি বাবন ঘোষ জানান, কোনও পরিষেবা দিতে কেউ যদি অবৈধভাবে কারো কাছ থেকে কোনওরকম ভাবে অর্থ দাবি করে আমার মনে হয় তার বিরুদ্ধে এফআইআর করা উচিত। তবে, এর সাথে কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। যদি এ ধরনের কোনো কাজ করে থাকেন তাহলে অবিলম্বে অনেকে গ্রেপ্তার করা হোক। আর শরিফ মণ্ডল আমাদের দলের কর্মী নয়।

মদনপুর ইউনাইটেড ব্যাংকের ম্যানেজার সুব্রত ময়রা বলেন, আমি ব্যাপারটা শুনেছি। শোনার পর শরীফকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করলে শরিফ জানায় যে প্রতিটা সিএসপি ব্রাঞ্চ চালাবার জন্য টাকা সবাই নেয়, আমরাও নিই স্যার। আমি তখন তাকে বলি কে নেয় বা নেয় না আমি জানি না তবে আমি থাকতে এই জিনিস আমি বরদাস্ত করব না। এই ঘটনা যেন দ্বিতীয়বার না হয়।

অভিযুক্ত শরীফ মন্ডল এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার সাফাইয়ে জানান, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এখন অ্যাকাউন্ট ওপেন হচ্ছে না। শুধুমাত্র টাকা তোলা যাচ্ছে। গ্রাহক আসছে যে যেরকম টাকা তুলছে আমরা দিচ্ছি। সবাই আসছে একাউন্ট খোলার জন্য কিন্তু আমিতো একাউন্ট খুলে দিতে পারছি না। টেকনিক্যাল প্রবলেম হলে আমাদের কি করার আছে। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার আমি। বিজেপি থেকে ত্রাণ বিলির জন্য দশরথ আর পিনাকীকে আমি চৌদ্দশ টাকা দিয়েছিলাম। তারা ত্রাণ বিলিও করেছে। এরপর রতন আর শ্যামল আমার কাছে এসে ত্রাণের জন্য টাকা চায়। আমি যখন বলি টাকা দিয়ে দিয়েছি তখন ওরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। ওরাই আমার বদনাম করছে।

মদনপুরের বিজেপির মন্ডল সভাপতি দশরথ অধিকারী জানান, রতন আর শ্যামল সদ্য সিপিএম থেকে এসেছে। এরা দলে এসে দলের মধ্যেই ভাঙন ধরাবার চেষ্টা চালাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মদনপুরের জয়েন্ট বিডিও সুরঞ্জন বিশ্বাস জানান, শরীফ মন্ডল অস্বীকার করেছে যে এখান থেকে কোন টাকা নেওয়া হয়। সেটা নিয়ে আমি কল্যাণী এসডিও স্যার কেও একটা রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি। ঘটনাগুলো যে ঘটছে এরকম অনেকে দাবিও করছে, আমরা সিএসপিগুলোকে নিয়ে বসবো ভেবেছি। যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে সেটা অন্যায় এবং কোনভাবেই করা যাবে না।পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও আমাকে বলেছেন এদের একদিন ডেকে ব্যাপারটা একটু ভালো করে বুঝিয়ে দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *