শান্তিপুরে প্রাক্তন কাউন্সিলরের ছেলের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ, গণস্বাক্ষর জমা পড়ল থানায়

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ২৫ জুলাই: কাউন্সিলরের ছেলে এবং তার দলবলকে প্রমোটিংয়ের জন্য বাগান কাটতে না দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের হুমকি, গালিগালাজ। রাতে ব্যাপক বোমাবাজির অভিযোগ কাউন্সিলরের ছেলেদের বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ দায়ের থানায়। নদিয়ার শান্তিপুরের সারাগড় শীতলাতলা এলাকার ঘটনা।

জানা যায়, শান্তিপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাধব সরকারের ছেলে মনোজ সরকার ও মনি সরকারের নেতৃত্বে কয়েকজন সমাজবিরোধী সারাগড় শীতলাতলা এলাকায় গত বৃহস্পতিবার প্রমোটিংয়ের জন্য আম বাগান বিক্রির উদ্দেশ্যে ফলন্ত গাছগুলি কাটতে আসে। অভিযোগ, সেই সময়ে স্থানীয় মানুষজন মনোজ সরকার ও তার দলবলকে গাছ কাটতে বাধা দেয়। অভিযোগ এরপরই ঐ এলাকায় আনুমানিক রাত বারোটার সময় মনোজ সরকারের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন সমাজ বিরোধী জড়ো হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে সেই রাতে মনোজ সরকার ও তার দলবল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হুমকি ও গালিগালাজ দিতে থাকে। এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেবার উদ্দেশ্যে পরপর ৫টা বোমা মারা হয় বলেও অভিযোগ। এরপরই শনিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে মনোজ, মনি এবং তাদের কয়েকজন বন্ধুর বিরুদ্ধে ১৭০ জনের গণস্বাক্ষর করা একটি অভিযোগ শান্তিপুর থানায় জমা দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর আগেও বহুবার এই সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও শান্তিপুর থানা কোনও রকম পদক্ষেপ নেয়নি। তাই বর্তমানে এলাকাবাসীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

ওই এলাকার সারাগড় শীতলাতলা বারোয়ারির সংলগ্ন এলাকায় মুখার্জির বাগান নামে একটি আম বাগানে দীর্ঘদিন ধরে গাছ কেটে ফাঁকা করে দিচ্ছে কাউন্সিলরের ছেলেরা। তোলাবাজি ধর্ষণ সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাদের নামে। অথচ প্রশাসন নির্বিকার, এমনটাই জানান সারাগর শীতলাতলা বারোয়ারির সভাপতি লক্ষণ পাল।

ওই এলাকার যুবক প্রসেনজিৎ পাল জানান, “এমন ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে থানার সামনে কোনও মুহুরি ওদের বিপক্ষে কমপ্লেন পর্যন্ত লিখতে চায় না।

স্থানীয় গৃহবধূ শ্যামলী পাল জানান, গত বৃহস্পতিবার মনোজ সরকার ও তার সহযোগীরা গাছ কাটতে আসলে বাধা দেয় এলাকাবাসীরা। তখনই হুমকি দিয়ে যায় বোম মেরে পাড়া, বারোয়ারি উড়িয়ে দেব। সেই অনুযায়ী সারাদিন শান্তিপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তের অসামাজিক বিভিন্ন কাজ কর্মের সাথে যুক্ত কিছু দুষ্কৃতী মদ খেয়ে বিবস্ত্র হয়ে মহিলাদের প্রতি অশালীন আচরণ এবং অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকে। রাত এগারোটা নাগাদ প্রবল শব্দে কেঁপে ওঠে পাড়া পরপর
৫ টি বোমা পড়ে পাড়ার মধ্যে।

বারোয়ারি সম্পাদক বিকাশ পাল জানান, এর আগেও থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে গুলি চলেছিল কদিন আগে। গতকাল রাতে এতগুলো বোম পড়ল, আমরা তার প্রতিবাদ করছি। জানি আমাদেরও প্রাণে মেরে দেবে। এতগুলো পরিবার কিছু নেতারুপী সমাজবিরোধীর অত্যাচারে প্রকাশ্যে অভিযোগ নয়, গণস্বাক্ষর জমা করেছি। এরপরেও আমাদের কোনও ক্ষতি হয়ে গেলে, দায়িত্ব নেবে কে? এ বিষয়ে প্রশাসন, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, পরিবেশ কর্মী, সর্বোপরি শান্তিপুরের শান্তিকামী মানুষের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইছি।

এ বিষয়ে মনোজ সরকারকে ফোনে পাওয়া না গেলে তার ভাই মনি সরকার জানান, অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে কলকাতা রয়েছি দুই ভাই। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে জানি না। তবে বিজেপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে। ওই বাগান আমাদের কেনা জায়গা। গাছ কাটার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *