জমি দখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন’, অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

আশিস মণ্ডল, বীরভূম, ৩০ জানুয়ারি: প্রতীচীতে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘গত কয়েকদিনে আমি খোঁজ নিয়েছি। অমর্ত্য সেনের জমির কাগজপত্র আনিয়েছি, জমি দখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন’, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।,

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতীচী বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমি আজ অমর্ত্য সেনের বাড়ি এসেছি। সবার শ্রদ্ধার নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ তিনি। বাংলার তথা সারা পৃথিবীর গর্ব। আমি উনার বাড়ির জমি নিয়ে যে অসম্মান ওনাকে করা হচ্ছে তা নিয়ে, গত কয়েকদিন ধরে খোঁজ খবর নিয়েছি। আমি কাগজপত্র নিজে সাথে করে নিয়ে এসেছি। আমার শ্রদ্ধা করা কাজ। অশ্রদ্ধা করা নয়। এক শ্রেণির কিছু মানুষের অভ্যাস অশ্রদ্ধা করা। যে কাগজ আমি পেয়েছি, এটা সরকারের ভূমি দপ্তরের নথি হিসেবে রয়েছে। সেই তথ্যসম্বলিত কাগজ আমি উনার হাতে তুলে দিয়েছি। আমরা অসম্মানের বদলে সম্মানের সঙ্গে উনার হাতে কাগজ তুলে দিলাম। উনাকে অসম্মান যেন বিজেপি না করে। বিজেপি নামধারী গৈরিকধারীরা না করে। বিশ্বভারতীকে আমরা গৈরিক ধারীদের চোখে দেখি না।”

“আমি ওনাকে আমার একটি বইয়ের ডালি দিয়ে গেলাম। যে বইটি বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে উনি আমাদের চা খাওয়ালেন সিঙ্গারা সন্দেশ খাওয়ালেন।”

সংবাদমাধ্যমে একটি চিঠি আমার চোখে আসে যে চিঠিটি বিশ্বভারতীর জয়েন্ট রেজিস্টারের ২৪শে জানুয়ারি লেখা। যে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে সে ১৯৪৩ সালে ২৭ অক্টোবর আশুতোষ সেন’কে ১২৫ ডেসিবেল জায়গা লিজে দেওয়া হয়েছিল। যা ২০০৬ সালে ট্রান্সফার করা হয় অমর্ত্য সেনের নামে। অতিরিক্ত জমি উনি দখল করে আছেন বলে অসম্মানিত করা হয়। আমি কয়েকদিন ধরে এই বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করেছি। ১৯৮৪ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর জেলা বীরভূম দাগ নম্বর ১৯০০/ ২৪৮৭ এই রেকর্ডে পরিষ্কার বলা আছে যে লিস দেয়া হয়েছে তা ১৩৮ ডেসিবিল। আমাদের রেকর্ড তাই বলছে। অমর্ত‍্য সেন যেটা বলছেন সেটাই ঠিক। তাহলে কে ভুল কে ঠিক এটা পরিষ্কার। তাহলে কেন অসম্মান করছেন? আমি চাই বিশ্বভারতী ভালোভাবে চলুক। শোকজ সাসপেন্ড অসম্মান করে নয়। গৈরিকীকরণের লেট রাইট না করে বিশ্বভারতী ভালোভাবে চলুক।”

“যখন রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আমি যুব দপ্তরের মন্ত্রী ছিলাম। তখন আমি বিশ্বভারতীর কোর্ট মেম্বার হিসেবে বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেছি। রাজীব গান্ধী জিজ্ঞাসা করেছিলেন ছাত্র-ছাত্রীদের তোমাদের আইকন কে হওয়া উচিত। ছাত্র-ছাত্রীরা চুপ করে ছিলেন। রাজীবজি আমাকে দেখিয়ে বলেছিলেন মমতা তোমাদের আইকন হওয়া উচিত।”

“কেউ যা-তা ভঙ্গিতে অপমান করছিলেন। বড় বড় কথা বলছিলেন। তাদেরকে ছোট্ট একটা ছক্কা মেরে গেলাম।”
এখানে পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। রবীন্দ্রনাথ চিন্তা করেছিলেন খোলা আকাশের নিচে এখানে সবাই পড়াশোনা করুক। অমর্ত্য সেনকে এই ধরনের কাজ করার জন্য অসম্মান করার জন্য বিবেকের দংশন হওয়া উচিত। ক্ষমা চাইতে হবে।”

উপাচার্যকে কটাক্ষ করে বলেন, “উনি কি নোবেলদাতা হয়ে গেছেন। রবীন্দ্রনাথের আসল নোবেলটা কোথায় গেল তার আগে জবাব দিন।”

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here