রাজ্যে করোনা চিকিৎসার খরচ মুখ্যমন্ত্রী বেঁধে দিলেও মানতে নারাজ চিকিৎসকদের সংগঠন

রাজেন রায়, কলকাতা, ২৬ জুন: রাজ্যে করোনা চিকিৎসার খরচ সংক্রান্ত দুর্নীতি বন্ধ করতে শুক্রবার নবান্নে করোনা সংক্রান্ত সমস্ত খরচ বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে করোনা পরীক্ষার সংক্রান্ত সমস্ত খরচ বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন “অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া”-র তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি তাদের পক্ষে কোনওমতেই মানা সম্ভব নয়। এখন মুখ্যমন্ত্রী বনাম হাসপাতাল সংগঠনের দড়ি টানাটানিতে কি ফলাফল হয়, তা দেখার অপেক্ষায় সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে অতিরিক্ত মাত্রায় করোনা চিকিৎসার খরচ নেওয়া হচ্ছে বলে বারবারই অভিযোগ আসছিল রাজ্য প্রশাসনের কাছে। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠক করে অতিরিক্ত খরচ নিতে নিষেধ করেছিলেন মুখ্যসচিব। কিন্তু তাতেও হাসপাতালগুলি তা মানতে চায়নি।

এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এতদিন বেসরকারি কেন্দ্রগুলিতে করোনা পরীক্ষার জন্য দিতে হত ৪৫০০ টাকা। এবার থেকে করে্নার নমুনা টেস্টের জন্য দিতে হবে ২২৫০ টাকা। সেই সঙ্গে পিপিই-সহ সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকার অন্যান্য সরঞ্জামের মূল্য দিনপিছু বেঁধে দেওয়া হল ১০০০ টাকা করে। এমনকি ডাক্তারের কনসাল্ট ফি-ও ১০০০ টাকাই নিতে হবে।এছাড়াও যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের সর্বোচ্চ খরচ কী হতে পারে, সেটি মূল্যায়নের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, বাংলায় সংক্রামিতের হার পরিবর্তন না হলেও ৬৫ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠছেন।

এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি মানা সম্ভব বলে রীতিমত প্রেস বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন “অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া।” তারা জানায়, বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে এত কম টাকায় তাদের পক্ষে রোগী পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। লকডাউনের সময় সমস্ত জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির জেরে হাসপাতালগুলিতে করোনা রোগী পিছু চিকিৎসা খরচও বেড়েছে। এছাড়াও পরিবহণ খরচ, খাবারের খরচ, হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল, জেনারেটর, মর্গের খরচ-সহ একাধিক খরচ রয়েছে। এছাড়া নন-কোভিড রোগী এবং হাসপাতালের স্টাফরা যাতে সংক্রামিত না হয়ে পড়েন, তার জন্যও খরচ করতে হচ্ছে হাসপাতালগুলিকে। এই পরিস্থিতিতে করোনা কিট, স্যানিটাইজার, পিপিই সহ সমস্ত সুরঞ্জামের দামও বেশ চড়া। তা সত্ত্বেও যতটা সম্ভব দাম কমিয়ে রোগীকে সেরা পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাদের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেননি। তাই এভাবে দাম বেঁধে দিলে তাদের পক্ষে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *