কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ না করলে আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রয়োজন হতো না: অমিত শাহ

আমাদের ভারত,৯ ডিসেম্বর:সংসদের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করতে গিয়ে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন,’কংগ্রেস যদি ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ না করতো তাহলে আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না।’

বেশ কিছুদিন ধরেই নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নিশানা দেগে চলেছে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেছেন মোদী- শাহ ভারতকে হিন্দু পাকিস্তান বানাতে চাইছেন। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী ও তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় সরকার অসাংবিধানিক কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন।তাদের আরও অভিযোগ সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে তা লংঘন করছে মোদি সরকার।

সোমবার বিল পেশ করতে গিয়ে বক্তব্য রাখার সময় এই সব অভিযোগের পাল্টা জবাব দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আজকের পরিস্থিতির জন্য সব দায় কংগ্রেসের ঘাড়ে তুলে দেন তিনি। শাহ বলেন, যুক্তিসঙ্গত শ্রেণিবিন্যাসের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব বিল সংশোধন করা হচ্ছে।

তিনি প্রশ্ন করেন, সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। তাহলে কেন কংগ্রেস সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল? তিনি আরও বলেন, এমন নয় যে নাগরিকত্ব আইন এই প্রথম সংশোধন করা হচ্ছে। এর আগে ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধী এই আইন সংশোধন করেছিলেন। তখন বলা হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করার পরই অমিত শাহ প্রশ্ন তোলেন কেন পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের তখন নাগরিকত্বের কথা বলা হয়নি?
তিনি বলেন সমস্যার শিকড়ের রয়েছে কংগ্রেসের ভ্রান্ত নীতি। কংগ্রেস যদি ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ না করতো তাহলে আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না।

এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই আইন কেন সংশোধন করার প্রয়োজন হয়েছে তা বিল নিয়ে যেদিন পূর্ণাঙ্গ বিতর্ক হবে তখন বলব। তিনি সংসদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা কি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের সংবিধান দেখেছেন? ও দেশের সংবিধানে স্পষ্ট করা আছে তারা ইসলামিক রাষ্ট্র। ফলে সেখানে মুসলিমদের ধর্মাচরণে কোনো বাধা নেই। কিন্তু সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। প্রতিদিন বাংলাদেশে হিন্দুদের বেছে-বেছে নিগ্রহ করা হচ্ছে।

শাহ বলেন, দেশভাগের সময় নেহেরু-লিয়াকৎ চুক্তিতে বলা হয়েছিল দু’দেশই সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে। ভারত সে কথা রাখলেও পাকিস্তান নিজের কথা রাখেনি। তাই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সংখ্যালঘু শরণার্থীদের প্রসঙ্গে এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই বিল পাশ হওয়ার পরেও যদি পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশের কোন মুসলিম সৎ ব্যক্তি ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন তা অবশ্যই বিবেচনা করে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *