“বহুবার অপমানিত হয়েছি, সামনে আরো অনেক পথ খোলা রয়েছে” পদত্যাগ করে কংগ্রেস ছাড়ার ইঙ্গিত অমরিন্দরের

আমাদের ভারত, ১৮ সেপ্টেম্বর:জল্পনাই শেষপর্যন্ত সত্যি হলো। শনিবার বিকেলে কংগ্রেস বিধায়ক দলের বৈঠকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অমরিন্দরের অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু ঠিক তার আধঘণ্টা আগেই নাটকীয়ভাবে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল বানোয়ারী লাল পুরোহিতের কাছে ইস্তফা দিলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। তবে এর চেয়েও বড় জল্পনা এবার তিনি কংগ্রেস ছাড়তে পারেন। সেই ইঙ্গিত নিজেই তিনি দিয়েছেন।

সূত্রের খবর, সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে অমরিন্দর ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন অপমান সহ্য করে তিনি আর দলে থাকতে চান না। তাঁর সঙ্গে আম আদমি পার্টির গোপন যোগাযোগ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ইস্তফা দেওয়ার পরই অমরিন্দর নিজেই কংগ্রেস ছাড়ার সম্ভাবনাকে আরো উস্কে দেন। তিনি বলেন,”কংগ্রেস নেতারা মনে করেন আমার রাজ্য চালানোর ক্ষমতা নেই। এটা অত্যন্ত অপমানজনক। ওরা যাকে পছন্দ করেন তাকে মুখ্যমন্ত্রী করুন। এই নিয়ে দুমাসে তিনবার কংগ্রেস বিধায়ক দিল্লিতে ডেকে বৈঠক হলো। আমার মনে হয় আমার যোগ্যতার নিয়ে হাইকমান্ডের সন্দেহ রয়েছে। তাই খুবই অপমানিত বোধ করছি। আমাদের সামনে সব বিকল্প খোলা রয়েছে।”

কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা অমরিন্দরের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই পাঞ্জাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক হরিশ রাওয়াত বিধায়কদের বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে অমরিন্দর বা তার অনুগামীরা যোগ দেননি। বরং অমরিন্দরের নেতৃত্বে রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের জন্য আলাদাভাবে বৈঠক করেন তারা। চলতি ঘটনা প্রবাহ পাঞ্জাব কংগ্রেসের ভাঙ্গনকে স্পষ্ট করে তুলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

এর আগে আশির দশকে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে সেনা অভিযানের প্রতিবাদে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন পাটিয়ালা রাজ পরিবারের সন্তান তথা প্রাক্তন সেনা অফিসার অমরিন্দর সিং। কয়েক বছর পর আবার দলে ফেরেন তিনি। জুলাই মাসে অমরিন্দরের আপত্তি সত্ত্বেও নভজোৎ সিং সিধুকে পাঞ্জাব প্রদেশের কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন সোনিয়া। এরপর দুপক্ষের বিরোধ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ্যে এসেছে। সিধুর অনুগামী একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়ক প্রকাশ্যে অমরিন্দরের অপসারণের দাবি করেছেন।

অন্যদিকে রাহুল গান্ধী যখন ঐতিহাসিক স্মারক জালিয়ানওয়ালাবাগের সৌন্দর্যায়নের কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন তখন অমরিন্দর জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই উদ্যোগ তার ভালো লেগেছে।

আগামী বছরের গোড়ায় উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে পাঞ্জাবের বিধানসভা ভোট। কিন্তু ঠিক তার কয়েক মাস আগে অমরিন্দর দল ছাড়লেন। আর এই ঘটনার কারণে কংগ্রেসের এই রাজ্য হাতছাড়া হতে পারে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *