সাংঘাতিক ঘটনা! মাদক পাচারের স্বর্গরাজ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে দুষ্কৃতির হাতে প্রাণ গেল বৃদ্ধর, আতঙ্ক কুমারগঞ্জে

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৭ নভেম্বর: মাদক পাচারের স্বর্গরাজ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন। পেটে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে ষাটোর্ধ বৃদ্ধকে। বাজার করতে গিয়েই দুষ্কৃতির খপ্পড়ে পড়ে রক্তাক্ত হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধর। ঘটনাকে ঘিরে তুমুল আতঙ্ক দক্ষিণ দিনাজপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রের খবর অনুযায়ী মৃত ওই বৃদ্ধর নাম আব্দুল আউয়াল কাজি (৬৮)। পেশায় কৃষক মৃত আব্দুলের বাড়ি সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দাউদপুর এলাকায়। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় ফকিরগঞ্জ বাজারে গিয়েছিলেন তিনি। যেখানে দাঁড়িয়ে চা খাবার সময় আচমকা আলম চৌধুরী নামে এক যুবক দৌড়ে এসে তার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই বৃদ্ধ পড়ে যেতেই ছুটে আসে স্থানীয়রা। তড়িঘড়ি তাকে প্রথমে কুমারগঞ্জ গ্রামীন হাসপাতাল এবং সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই শনিবার রাতে মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধর। এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। যদিও ওইদিন রাতেই অভিযুক্ত যুবক আলম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। তবে ওই বৃদ্ধর খুনের কারণ নিয়ে যথেষ্টই ধন্দে পড়েছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশায় তার পরিবারের লোকেরা ও স্থানীয় লোকজনও। যদিও এই ঘটনার কারণ হিসাবে অনেকেই এলাকার মাদক পাচারের অতি সক্রিয়তাকেই দায়ী করেছেন। একই অভিযোগ তুলেছেন এলাকার প্রাক্তন প্রধান তথা পঞ্চায়েত সদস্যও। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের নিস্ক্রীয়তায় গোটা ব্লক জুড়ে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে মাদক পাচারকারীরা। যাদের তান্ডবে কার্যত অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার বাসিন্দারা। অভিযুক্ত যুবকও ওই চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আর যার কারণেই এই খুনের ঘটনা।

মৃতর ছেলে দেলোয়ার হোসেন কাজী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই বাবাকে খুন হতে হল। চা খেয়ে টাকা দেবার সময় ওই যুবক বাবার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিয়েছে। প্রশাসন অভিযুক্তর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক।

স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর সরকার বলেন, অত্যন্ত সাদাসিধে লোক ছিলেন আব্দুল আউয়াল কাজী। কারো সাথে কোনো বিবাদ ছিল না তার। কিন্তু তাকে এভাবে চলে যেতে হবে কেউ ভাবতে পারেনি। ঘটনার পিছনে মাদকাসক্তদের কারসাজি থাকবার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশ এই খুনের সঠিক কারণ খুঁজে বের করুক।

এলাকার প্রাক্তন প্রধান তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হোচিমিন সরকার বলেন, নেশাখোরদের যে এলাকায় তান্ডব বেড়েছে তা সঠিক। ওইদিন বিকেলে আলম মুরগি কাটবার জন্য ডাঙ্গারহাটের একটি মুরগির দোকান থেকে ধারালো ছুরিটি নিয়ে গিয়েছিল। যা দিয়েই খুন করেছে সে। পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এবং মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।

যদিও কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *