আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৭ জুন:
অন্ধ্রপ্রদেশের ‘অর্কতৃস্না’ প্রজাতির মিষ্টি আঙুর এখন বাংলার মাটিতেও ফলছে। উত্তর ২৪ পরগণার হালিশহর পূর্বাচলের বাসিন্দা অরুণ কুমার নাথের পরিচর্যায় তার বাড়ির ছাদে ফলছে সুমিষ্ট আঙুর। তিনি নিজের বাড়িতেই গাঙ্গেয় পলিমাটিতে অন্ধ্রপ্রদেশের ‘অর্কতৃস্না’ নামক বিশেষ প্রজাতির আঙ্গুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। হালিশহর স্টেশনের সন্নিকটে অরুণ বাবুর বাড়ি এখন ‘আঙুর বাড়ি’ নামেই পরিচিত। আশ্চর্যের বিষয় হল, বাংলার সমতলে দোঁয়াশ মাটিতে যে দোফলা আঙ্গুর ফলছে তা স্বাদে খুবই মিষ্টি। নাগপুরের আঙুরের চাইতে স্বাদের ক্ষেত্রে কোনও অংশে কম নয় এই আঙুর। এই আঙুরের বছরে দুবার ফলন ঘটে, যা কিনা গোটা বছরের চাহিদা মেটায়। অর্কতৃস্না প্রজাতির গাছ বহুবর্ষজীবী। সামান্য কিছু রক্ষণাবেক্ষণের বিনিময় ফলে যাবে বাড়ির ছাদে আঙুর। আটের দশকে কর্মজীবনে প্রথম তিনি এই গাছ লাগান দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের ভোজুড়ে রেল কলোনিতে। ১৯৯৯ সালে কর্ম জীবন থেকে অবসর নিয়ে তিনি ফিরে আসেন হালিশহরে নিজের বাড়িতে। হালিশহরের পৈতৃক বাড়িতে এই চাষ শুরু করেন।
বাড়ির ছাদ ঠান্ডা করাই তার প্রথম উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু এভাবে যে আঙুর গাছটি তাকে মায়ায় জড়িয়ে ফেলবে তা তিনি ভাবতেই পারেননি। প্রথম ফলনের পরে সেই ফল নিজের হাতে বিতরণ করেছিলেন এলাকাবাসীদের।
এই গাছকে তিনি নিজের সম্পত্তি করে রাখতে চাননা, সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান। তিনি চান তার পাশাপাশি অন্যরাও বাড়িতে আঙ্গুর গাছ লাগান। আর এর জন্যে তিনি সব রকমের সহায়তা করবেন। ইতিমধ্যেই তার কাছ থেকে বহু মানুষ আঙুরের চারা নিয়ে গিয়ে আঙুর চাষ করছেন।
অরুণ বাবু বলেন, “আমি চাই কৃষিবিদরা এগিয়ে এসে এই আঙুর চাষকে আরও উন্নত করুন, যাতে এই আঙুর চাষ কম খরচে সবাই করতে পারে। যাতে সবার উপকার হয়। এই আঙুর চাষ করলে বাড়ি ঠান্ডা থাকে। সারা বছর ফলে আর এই আঙুর শরীরের জন্য উপকারী।”
প্রসঙ্গত, অরুণ বাবুর বাড়িতে আঙুর উৎপাদনের এই আশ্চর্য ঘটনা দেখতে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এসেছিলেন এবং প্রশংসা করে গেছেন।