নদীর বালি তোলার বরাত দিতে ১০ কোটি টাকা চেয়েছিলেন অনুব্রত, দাবি গাড়ি ব্যবসায়ীর

আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ১৯ আগস্ট: “উনার কথা ছাড়া গাছের পাতাও নড়ত না। গাড়ি চাইতে গিয়ে গাঁজার কেস দিয়ে হাজতে পুরে দেওয়ার হুমকিতে আইনের পথে এগোইনি”। অনুব্রত মণ্ডলের গাড়ি উদ্ধার কাণ্ডে এমনই মন্তব্য করলেন গাড়ির মালিক প্রবীর মণ্ডল এবং তার পার্টনার অরূপ ভট্টাচার্য।

শুক্রবার সকাল থেকেই বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের ভোলে বোমা রাইস মিলে তল্লাশি চালায় সিবিআই। সেখানে একটি গ্যারেজ থেকে বেশ কিছু গাড়ির হদিশ পাওয়া যায়। তার মধ্যে একটি মূল্যবান গাড়ি হচ্ছে ডবলু বি ৫৪ ইউ ৬৬৬৬। এই গাড়িটি রয়েছে প্রবীর মণ্ডলের নামে। বাড়ি বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার নারায়ণঘাঁটি এলাকায়। তবে ব্যবসায়ী সূত্রে তিনি সিউড়িতে থাকেন। সিবিআই গাড়ির মালিকের খোঁজ করতেই প্রবীর মণ্ডল এবং তার পার্টনার গাড়ি ব্যবসায়ী অরূপ ভট্টাচার্য বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সংবাদমাধ্যমের সামনে।

প্রবীরবাবু বলেন, “তিলপাড়া নদী সংস্কারের জন্য আমাদের বরাত পাইয়ে দিতে অনুব্রত ওই গাড়ি আমাদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের বিশ্বকর্মা পুজোর দিন গাড়ি দিয়েছিলাম। ভিআইপি নম্বর সহ গাড়ির দাম পড়েছিল ৪৬ লক্ষ টাকা। পরে গাড়ি চাইতে গেলে আমাদের গ্যাঁজা কেস দিয়ে জেলে ভরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তাই ভয়ে আর গাড়ি চাইতে যাইনি। কোন অভিযোগ জানাতেও যাইনি। কারণ অনুব্রত মণ্ডল বীরভূমের রাজা ছিলেন। ওর ভয়ে থানায় অভিযোগ নেয়নি”।

অরুপ ভট্টাচার্য বলেন, “তিলপাড়া নদী সংস্কারের জন্য আমরা ডিপিআর করিয়েছিলাম। বাকি প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে অনুব্রত মণ্ডল সাহায্য করেছিলেন। তার জন্য তিনি ১০ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। বলেছিলেন, ২০০ কোটি টাকার বালি রয়েছে নদীতে। ফলে দাবি মতো টাকা দিতে হবে। আমরা নগদে ৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। আর ওই গাড়িটি দিয়েছিলাম। কিন্তু দাবি মতো টাকা দিতে না পারায় আমাদের টেন্ডার বাতিল করে দেন। পরে টাকা এবং গাড়ি চাইতে গেলে গাঁজার কেস দিয়ে জেলে ভরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *