রাজেন রায়, কলকাতা, ১২ ডিসেম্বর: তৃণমূল সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে এক সময় বিজেপির পক্ষেই কথা বলেছিলেন অপর্ণা সেন। আর এবার কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে “গণতন্ত্র সঙ্কটে” এমন কথা বলে ফের শোরগোল ফেলে দিলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তার বক্তব্যে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
বাঙালি সমাজের রাষ্ট্রসমূহে জায়গা রয়েছে বরেণ্য অভিনেত্রী, পরিচালক তথা বুদ্ধিজীবী অপর্ণা সেনের। তাই তিনি মুখ খুলতেই তীব্র অস্বস্তি ছড়িয়েছে কলকাতা থেকে দিল্লির গেরুয়া শিবিরে। যখন নাড্ডা কাণ্ডে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে বিজেপি ও কেন্দ্র সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, ঠিক তখন কেন্দ্র ও বিজেপিকে ফের অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে বিঁধলেন স্বনামধন্য অভিনেত্রী ও পরিচালক অপর্ণা সেন। তাঁর ট্যুইটের খোঁচায় এখন তীব্র অস্বস্তি ছড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরে।
কী লিখেছেন অপর্ণা? ‘দেশের গণতন্ত্র বর্তমানে সংকটে। কোনও ঘটনার প্রতিবাদও এখন করা যাবে না।’ নাম না করে এভাবেই কেন্দ্রের মোদী সরকারকে বিঁধেছেন বাঙালির দৃষ্টিকোণ থেকেই।নিজের ট্যুইটারে অপর্ণা লিখেছেন, ‘দয়া করে দেশের কোনও ঘটনার প্রতিবাদ করবেন না। যদি করেন তাহলেই আপনি হয় দেশদ্রোহী আর নয়তো আর্বান-নকশাল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাবেন। কিন্তু পাকিস্তানের সমর্থক হিসেবেও প্রতিপন্ন হতে পারেন। নয়তো বলা হতে পারে, আপনি টুকরে টুকরে গ্যাংয়ের প্রতিনিধি আর নাহলে একজন সন্ত্রাসবাদী বা খালিস্তানি। যে কোনও মুহূর্তে আপনাকে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। তাই সাবধান।’
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে তাঁকে যেমন গর্জে উঠতে দেখা গিয়েছে তেমনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কিংবা দেশের মুসলিমরাই কেন শুধু আক্রমণের শিকার হচ্ছে, এমন প্রশ্ন তুলেও মোদী সরকারকে কোণঠাসা করে দিয়েছেন। আবার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম থেকে হালফিলের এনআরসি নিয়েও। নিজের ট্যুইটের মধ্যে দিয়েই বিশ্ববরেণ্য এই পরিচালক, বুদ্ধিজীবী বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের অসহিষ্ণুতা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এরপরেও কেন্দ্রীয় নেতারা তথা বঙ্গ বিজেপি এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন কিনা, তা বলা কঠিন।