
জয় লাহা, আমাদের ভারত, দুর্গাপুর, ১ এপ্রিল: দুয়ারে সরকারে আবেদন করেও বিদ্যুৎ সংযোগ জোটেনি। আর তার প্রতিবাদে দুয়ারে সরকার শিবিরে বিদ্যুৎ বিভাগের টেবিল উল্টে দিল স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। শনিবার ঘটনাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা ছড়াল কাঁকসার কৃষ্ণপুর গ্রামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামল বিশাল পুলিশ বাহিনী। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে নির্ধারিত সংযোগ রাশি জমা না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগ।
প্রসঙ্গত, গত ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প দুয়ারে সরকার চালু হয়। উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে ঘরের দুয়ারে সঠিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। শনিবার কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুর গ্রামে ছিল দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। তাতে অন্যান্য দপ্তরের মতন বিদ্যুৎ দপ্তরের ক্যাম্পও করা হয়েছিল। এই সময় ক্যাম্পে আসেন তৃণমূলের স্থানীয় দুই নেতা।
অভিযোগ, প্রায় ৫ মাস আগে দুয়ারে সরকার শিবিরে কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতের শিবপুরের রায়ডাঙ্গার কয়েকটি পরিবার বিদ্যুত সংযোগের আবেদন জানিয়েছিল। আবেদনের পরেও অমিল বিদ্যুৎ পরিষেবা। আরও একটা দুয়ারে সরকার শিবির। কিন্তু, আজও মেলেনি বিদ্যুৎ সংযোগ।
বিদ্যুতের জন্য আবেদনকারী অজিত বাগদীর অভিযোগ, “৫ মাস আগে বিদবিহারে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে বিদ্যুতের জন্য আবেদন করলেও পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ মেলেনি।” আর পরিষেবা না পাওয়ার দরুন জনগণকে জবাবদিহি করতে হয় এলাকার দুই দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন সুত্রধর ও অঞ্চল সভাপতি কাজল শেখকে। অভিযোগ, বার বার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে তাদের। আর সেই ক্ষোভ এদিন উগরে দিলেন ওই দুই দাপুটে তৃণমূল নেতা। বিদ্যুৎ দপ্তরের স্টলের টেবিল উল্টে দিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। ফলে সব কাগজপত্র ছড়িয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ কর্মীদের ব্যাপক ধমক দিতে দেখা যায় তৃণমূল নেতাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত না বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ বিদ্যুৎ কর্মীদের ক্যাম্পে বসতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয় ওই তৃণমূল নেতারা। ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মলানদিঘি ফাঁড়ির পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানান,
“সরকারি কাজে বাধা দেওয়া দল কোনরকম বরদাস্ত করবে না। কড়া সতর্ক করা হয়েছে।”
অন্যদিকে দুর্গাপুর বিদ্যুৎ বিভাগের ডিভিশনাল ম্যানেজার সাহেল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, “নিয়ম অনুযায়ী আবেদনকারীদের গত ডিসেম্বর মাসে বিদ্যুৎ সংযোগের কোটেশন মানি জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু, কোনরকম কোটেশন মানি জমা দেয়নি। তাই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি।”