পুলিশের হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট ফাঁস করে মণীশ হত্যায় ফাঁসানোর দাবি অর্জুনের, তোলপাড় অন্দরমহল

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৬ অক্টোবর: কয়েক দিন আগে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ একটি হোয়াটস্‌অ্যাপ গ্রুপের ‘চ্যাট’ প্রকাশ্যে আনেন। অর্জুনের দাবি, ওই গ্রুপের সকল সদস্য রাজ্য পুলিশের ১৯৯৮ ব্যাচের আধিকারিক। কেউ বর্তমানে সিআইডিতে, আবার কেউ বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা বা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানা বা জিআরপিতে কর্মরত। ওই চ্যাটের স্ক্রিনশট দেখিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ এভাবেই মণীশ শুক্লা খুনে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে সিআইডি।”

ওই চ্যাট প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো টালমাটাল পরিস্থিতি শুরু হয়েছে পুলিশের অন্দরেও। পুলিশ হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপের ওই চ্যাট কে ফাঁস করল, পুলিশের ভিতরের খবর কে অর্জুন সিংয়ের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে, সেই লক্ষ্যে বিভীষণের খোঁজে তল্লাশি চলছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবং রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি”র অন্দরে।সিআইডি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পুলিশের একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আধিকারিকদের সন্দেহ, গ্রুপের কোনও সদস্যই ফাঁস করেছেন ওই চ্যাট।

তবে যে আধিকারিকদের নাম ওই চ্যাটে দেখা গিয়েছে তাঁদের দাবি, গোটাটাই জাল। কেউ জাল একটি স্ক্রিনশট বানিয়েছে। জাল যদি হয়, তা হলে ঘটনার পরেই কেন ওই গ্রুপ ভেঙে দেওয়া হল তার কোনও উত্তর দেননি রাজ্য পুলিশের আধিকারিকরা।

কি রয়েছে ওই চ্যাটে? এক আধিকারিককে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে, ‘শুনছি চার্জশিটে অর্জুনের নাম আছে, খবর পেলাম’। তার জবাবে অন্য এক আধিকারিক লিখেছেন, ‘ওটা তো রাখতেই হবে’। সেই সঙ্গে হাসির ইমোজি। এর পরেই মন্তব্য করা হয়েছে এক আধিকারিক সম্পর্কে, তিনি আবার মণীশ খুনের মামলায় যুক্ত। সিআইডি সূত্রে খবর, অর্জুন ওই চ্যাট প্রকাশ করার পরেই শোরগোল পড়ে যায় গোয়েন্দা সংস্থার অন্দরমহলে।

রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা এবং সিআইডির এক কর্তা ওই আধিকারিকদের কাছে ব্যাখ্যা চান, কী ভাবে এ রকম চ্যাট প্রকাশ্যে এল? সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের ১৯৯৮ ব্যাচের আধিকারিকদের প্রায় সবাই রয়েছেন ওই হোয়াটস্‌অ্যাপ গ্রুপে।
এক আধিকারিক বলেন, ‘‘১৯৯৮ সালের আধিকারিকদের ওই গ্রুপ থেকেই এর আগে আরও এক বার চ্যাট ফাঁস হয়েছে।” শীর্ষ কর্তাদের সন্দেহ, রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের অনেকেই গোপনে যোগাযোগ রাখছেন বিজেপি-র বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে। পুলিশের অন্দরে চলা কথাবার্তা আগে ভাগে ফাঁস করে দিচ্ছেন। তাই কে ঘরশত্রু বিভীষণের কাজ করছেন, আপাতত তার খোঁজেই চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *