বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরে নিজস্ব মুদ্রা চালু করল জঙ্গি সংগঠন আরসা

আমাদের ভারত, ২৩ ডিসেম্বর: বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে জঙ্গি সংগঠন “আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি” নিজস্ব মুদ্রা চালু করেছে। আর এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশে যে জেহাদের অন্ধকার আরও গাঢ় হলো মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ একটি দেশে শরনার্থী ক্যাম্পে অন্য একটি মুদ্রা বিনিময় মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে তা সেই সেদেশের পক্ষে মোটেই নিরাপদ নয় বরং বড়সড় হুমকি বলেই মত সামরিক বিশ্লেষকদের।

জানা গেছে মায়ানমারের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি বা আরসা নিজেদের ভিত আরও মজবুত করতে বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে তাদের নিজস্ব মুদ্রা চালু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে তারা এই মুদ্রার চালুর পক্ষে প্রচার শুরু করে বলে খবর। প্রাথমিকভাবে কয়েকটি শরণার্থী ক্যাম্পে মুদ্রা চালু হয়েছে। তবে জঙ্গিগোষ্ঠীর পরিকল্পনা প্রতিটি শরণার্থী ক্যাম্পে এই মুদ্রার তারা অবিলম্বে চালু করবে।

২০১৭ সালের মায়ানমারের একাধিক সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় আরসা। তারপর ওই দেশটির সেনাবাহিনী আরসা সহ রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। সেই সময় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে চলে আসে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে আরসার এই নতুন মুদ্রা প্রচলনকে বাংলাদেশের জন্য হুমকি বলে মনে করছে বাংলাদেশের সামরিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে কোনো দেশ প্রতিষ্ঠা লাভের পর তার নিজের মুদ্রা চালু করে থাকে। সেখানে একটি জঙ্গি সংগঠন কেন মুদ্রা প্রচলন করল, তার যথেষ্ট সন্দেহ জনক। বাংলাদেশ সরকারের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত বলে মনে করছেন তারা।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের সূত্রে খবর বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই এই নতুন মুদ্রা চালুর বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করতে শুরু করেছে আরসার সদস্যরা। বেশকিছু ক্যাম্পে নতুন মুদ্রায় বিনিময় শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরসার নিয়ন্ত্রণে থাকা সব ক্যাম্পগুলোতেই নতুন মুদ্রা দিয়ে বিনিময় পুরোদমে শুরু হতে চলেছে।

প্রাথমিকভাবে ১০০০,৫০০ ও ১০০ টাকার নতুন নোট ছেড়েছে আরসা। মুদ্রায় রয়েছে আরসা নেতা আতাউল্লাহের ছবি। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব রয়েছে আরসার। বাংলাদেশের ৩২ টি রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের মধ্যে ২৭টিতে একক আধিপত্য রয়েছে আরসার। শরণার্থী ক্যাম্প গুলিতে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি কিশোরী-তরুণী, মাদক, মানব পাচার, ডাকাতি, অস্ত্র ব্যবসা, তোলাবাজি সহ একাধিক অপরাধ মূলক কাজে তারা রোহিঙ্গারাদের ব্যবহার করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *