বাংলাদেশের চক্রান্ত! মধ্যরাতে বালুরঘাটের আত্রেয়ীতে জলস্ফীতি, তলিয়ে গেল স্বল্প উচ্চতার নির্মীয়মান বাঁধ

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৪ মে: মধ্যরাতে হঠাৎ আত্রেয়ী নদীতে জলস্ফীতি। এর ফলে বালুরঘাটে তলিয়ে গেল স্বল্প উচ্চতার নবনির্মিত বাঁধ। ভেসে গেছে বহু সামগ্রী, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। বাংলাদেশের চক্রান্তেই আত্রেয়ীর উপর নির্মিত রাবার ড্যাম থেকে প্রচুর ছাড়া হয়েছে, দাবি সেচ দপ্তরের।

বালুরঘাটে আত্রেয়ী নদীর জল ধরে রাখতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে একটি স্বল্প উচ্চতার বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে প্রশাসন। এই কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জেলাশাসকের কাছে প্রায়ই খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকালের এমন জলস্ফীতিতে সেই কাজ অনেকটাই ক্ষতির মুখে পড়ে পিছিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বালুরঘাটের বাসিন্দারা।

সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে আত্রেয়ী নদীর উপরে একটি রিভার ড্যাম দেওয়া হয়েছে। যার ফলে ভারতের দিকে আত্রেয়ীতে সারাবছর জল থাকে না। গ্রীষ্মকালে বালুরঘাট ও কুমারগঞ্জে ব্যাপক সমস্যায় পড়েন কৃষকরা। আবার বর্ষায় হঠাৎ করে নদীর জল ছেড়ে দেওয়া হলে হরপা বানের সৃষ্টি হয়। তাই পালটা সুরক্ষা কবচ হিসেবে রাজ্য সরকারের অনুদানে ৩২ কোটি টাকা খরচ করে বালুরঘাট শহরের চকভবানী এলাকায় নদী বরাবর স্বল্প উচ্চতার বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। নদীতে আড়াআড়িভাবে স্বল্প উচ্চতার বাঁধ দেওয়া হচ্ছে।

কয়েক মাস আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁধের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেচ দপ্তর, বর্ষার আগেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য রাত দিন এককরে কাজ শুরু করেছে। নদীর জল আটকে এই কাজের জন্য ইউ আকৃতির বালির বস্তার বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তবুও এই বিপত্তি ঘটে। যার কারন হিসাবে বাংলাদেশকেই দায়ী করেছে সেচ দপ্তর। বাংলাদেশের এই ইচ্ছাকৃতভাবে জল ছাড়ার পেছনে কোনও বৈদেশিক ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা, তা নিয়েই সন্দেহ বাড়ছে। শনিবার সেচ দপ্তরের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপন বিশ্বাস, কার্যনির্বাহী বাস্তুকার রঞ্জন রায় সহ অন্যান্যরা বাঁধের কাজের এলাকা পরিদর্শন করেছে। তারা এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট জেলাশাসক ও রাজ্যেও পাঠিয়েছে।

জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে তিন ঘন্টায় তিন মিটার জল বেড়ে যায়। এদিকে জল বেড়ে যাওয়ায় নদীর মধ্যে ছাউনি করে রাখা ঘরের সিমেন্ট, পাথর, লোহা, বিভিন্ন মেশিন, কাজের সরঞ্জাম অনেক কিছু ভেসে চলে গিয়েছে। অন্যদিকে, আত্রেয়ীর জল বেড়ে যাওয়ায় বালুরঘাট শহরের কালিকাপুর-রঘুনাথপুর সংলগ্ন বাঁশের সাঁকো জলের তোড়ে ভেঙ্গে গিয়েছে। এর ফলে শহরের সাথে বেশ কিছু গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সেচ দপ্তরের মুখ্য কার্যনির্বাহী বাস্তুকার স্বপন বিশ্বাস বলেন, রাত ১২ টার পর থেকে হটাৎ নদীতে জলস্তর বাড়তে থাকে। যার ফলে আমাদের বাঁধের কাজের অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। অনেক কিছু নদী থেকে তুলতেই পারেনি। এছাড়াও নির্মাণ সামগ্রীর অনেক কিছু ভেসে গিয়েছে। বৃষ্টি হলেও এত তাড়াতাড়ি জল বাড়ে না। সম্ভবত বাংলাদেশের রিভার ড্যাম থেকে এই জল ছাড়া হয়েছে। যার ফলে আমাদের রিভার ড্যামের কাজের ক্ষতি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *