রাজেন রায়, কলকাতা, ১৭ জুন: নাগরিকদের আরও ভাল পরিষেবা দিতে এবং বিরোধী দল বিজেপির সংগঠনকে রাজনৈতিক ভাবে দুর্বল করতে এক ঢিলে দুই পাখি মারার এবার নয়া কৌশল রাজ্য সরকারের। রাজ্যে অষ্টম পুরনিগম তৈরির লক্ষ্যে এলাকা বিন্যাস করে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে অনুমোদনের জন্য পাঠালেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক। সূত্রের খবর, সেই আবেদনই এখন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। এরপরে তা ক্যাবিনেট বৈঠকে পাশ হলে প্রয়োজন রাজ্যপালের অনুমোদন। সব ঠিকঠাক চললে এ বছরের শেষেই কাজ শুরু হয়ে যাবে ব্যারাকপুর পৌরনিগমের।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে সাতটি পুরনিগম রয়েছে গোটা রাজ্যে। সেগুলি হল, কলকাতা, হাওড়া, বিধাননগর, চন্দননগর, দুর্গাপুর, আসানসোল এবং শিলিগুড়ি। ব্যারাকপুর কর্পোরেশন গঠিত হলে রাজ্যে কর্পোরেশন সংখ্যা দাঁড়াবে আটটি। ব্যারাকপুর মহকুমার টিটাগড়, ব্যারাকপুর, উত্তর ব্যারাকপুর, কাঁচরাপাড়া, গারুলিয়া, ভাটপাড়া, নৈহাটি, হালিশহর এই ৮টি পুরসভা নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই ব্যারাকপুর পুরনিগম।
তবে ব্যারাকপুর পৌর নিগম গঠনের সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক কৌশল মানছে রাজনৈতিক মহল। প্রস্তাবিত পুরনিগমের অন্তর্গত পুরসভাগুলির মধ্যে বেশ ক’টি পুরসভা রয়েছে, যেগুলি এই মুহূর্তে বিজেপির গড় হিসেবে পরিচিত। বেশ ক’টি পুরসভায় বিজেপি শীর্ষ নেতারা রয়েছেন। কয়েকটি পুরসভা জিতলেও বিজেপির প্রচারে আসা সহজ। অন্য দিকে ব্যারাকপুরের বড় কর্পোরেশন দখল করাটা বিজেপির পক্ষে এই মুহূর্তে কঠিন। সেক্ষেত্রে এর ফলে বিজেপিকে রাজনৈতিক ভাবে দুর্বল করে দেওয়া সহজ হবে।
যদি রাজনৈতিক মহলের একাংশ এটাও মনে করছেন, রাজ্যপালের অনুমোদন ছাড়া কিছুতেই ওই পুরনিগম চালু হবে না। সাম্প্রতিক কালে বিধানসভার বেশ কিছু বিলও রাজ্যপাল আটকে রেখেছেন। অনেকেই রাজ্যপালের প্রত্যেকদিনের ট্যুইটের পিছনে বিরোধী দল বিজেপির পরোক্ষ যোগসাজশের দাবিও করেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল এই অনুমোদন দেন কি না সেটাই দেখার। তবে রাজ্যপাল অনুমোদন দিলে যেমন লাভ, তেমনই অনুমোদন না দিলেও ক্ষতি হবে না দাবি শাসকদলের। কারণ সেক্ষেত্রে তাকে জনস্বার্থবিরোধী এবং পক্ষপাতদুষ্ট রাজ্যপাল হিসেবে প্রমাণ করা আরও সহজ হয়ে যাবে। তাই এই বিষয় নিয়ে কি সিদ্ধান্ত হয় সেদিকে তাকিয়ে যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলই।