করোনা আতঙ্ক! আলিপুরদুয়ারে মৃতদেহ কবর দিতে বাধা, পুলিশের গাড়িতে আগুন

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ২০ এপ্রিল: রবিবার রাতে তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা এক বৃদ্ধের মৃত্যু ঘটনা সামনে আসতেই জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়ে গোটা জেলা জুড়ে। মৃত ব্যক্তিকে কবর দেওয়া নিয়ে স্থানীয় মানুষজনের তীব্র বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের গাড়ি সহ বুলডোজার ভাঙ্গচুর করা হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের একটি গাড়িতে।
তবে মৃত ব্যক্তি আদৌ কোভিড–১৯ পজিটিভ ছিলেন কিনা তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি। মৃত্যুর আগে সংগ্রহ করা লালারস আজ শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুরের পর জেলার কালচিনি ব্লকের ৬০বছরের এক বৃদ্ধ জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আসলে তাঁকে সেখান থেকে আয়ুষ হাসপাতালে রেফার করা হয়। জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের কথায় তপসিখাতার করোনা হাসপাতালে ভর্তির পরই ওই বৃদ্ধের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সেই নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো সম্ভব হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য অধিকর্তা পূরন কুমার শর্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,”বৃদ্ধের কোনও বাইরে ভ্রমণ যোগ নেই। আবার কোনও সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্ষে আসার রেকর্ডও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তিনি প্রায় ১০বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। সোমবার তার লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠাবো আমরা।”
এদিকে মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই আয়ুষ হাসপাতালে যান জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
এরপরেই সমস্ত বিধি মেনে রাতেই জেলার জলদাপাড়া লাগোয়া শালকুমারের তোর্ষা নদীর চড়ে জেলা প্রশাসনের ঠিক করা স্থানে মৃত ব্যক্তিকে কবর দেবার ব্যবস্থা করতে গেলে স্থানীয় মানুষজনের তীব্র বাধার সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ। এমকি পুলিশের গাড়ি সহ বুলডোজারে ভাঙ্গচুর চালানো হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের একটি গাড়িতে। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

পুলিশ থেকে স্থানীয় নেতৃত্ব সকলেই স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। উল্লেখ্য, রবিবার পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার জেলার একটিও কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর সন্ধান সামনে আসেনি। ইতিমধ্যে প্রায় ১৪হাজার মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এমনকি করোনা মোকাবিলায় আলিপুরদুয়ার জেলা সরকারি স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার প্রশংসা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)র জাতীয় উপদেষ্টা কাজি তৌফিক। তিনি সোসাল মিডিয়ায় আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ‘মিনি মডেল’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে দেশ জুড়ে এই ব্যবস্থার প্রচারের প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন। তবে তার মধ্যেই রবিবার রাতের ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক, জল্পনা ছড়িয়েছে। এখন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে জেলাবাসী সকলেই পরীক্ষার রিপোর্টের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *