বসন্তের কুসুমশোভা: কল্যাণ চক্রবর্তী

আমাদের ভারত, ১৪ মার্চ: বসন্তের সমাগমে পলাশের ডাকে, শিমূলের আহ্বানে যখন আমরা বিহ্বল, ঠিক তার পরে পরেই ডেকে ওঠে কুসুমের রঙিন কচিপাতা। সে ডাকে সাড়া না দিয়ে পারা যায় না৷ দক্ষিণবঙ্গে কুসুমের কচি পাতা বের হয় মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তৃতীয়/চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত আসে কচি পাতা। লাল কচিপাতার মাঝে ফুলের মুকুল। কাণ্ডের গা-টি কিছুটা খড়খড়ে। গাছটিকে ‘জায়না’ নামে অভিহিত করা হয়। এটি স্যাপিনডেসী পরিবারের একটি গাছ। এই পরিবারের সদস্য গাছগুলি হচ্ছে লিচু, আঁশফল, রীঠা প্রভৃত বিজ্ঞানসম্মত নাম স্ক্লেইচেরা ওলিওসা
(Schleichera oleosa_). রাজ্যের রুখাশুখা লালমাটি এলাকা যেমন পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় এটিকে বন্যফল রূপে খাওয়া হয়। শিশুদের খুব পছন্দের ফল। বনভূমিতে একটি স্বাভাবিক বৃক্ষ হলেও ইদানীং তা হারিয়ে যেতে বসেছে।

বছর কুড়ি আগের এক গ্রীষ্মের বিকেলে মেদিনীপুরের কাছে গোকুলপুর স্টেশনে আপন মনে সমীক্ষা করছিলাম বুনোফল অথবা গৌণফল কী কী পাওয়া যায় এলাকায়, যা খাদ্যযোগ্য ফল দেয়। চারা সংগ্রহ করবো পরে এমনই বাসনা ছিল। এক বাড়িতে পৌঁছে পেলাম তার আদরের কুসুম বৃক্ষ। ফলে ভরে আছে গাছ। কয়েকটা পাকাফল আমাকে খেতে দিলেন গাছের মালিক। হ্যাঁ ডিমের কুসুমের মতো রঙই বটে। পাকা ফলের খয়েরি খোসা ছাড়ালাম, ভেতরে ডিম-কুসুম রঙের শাঁস প্রকাশিত হল। আগে খাওয়া হয়নি কখনও এই ফল, যদিও গাছ দেখেছি, ফলও দেখেছি আগে। এর বীজ থেকে ভোজ্যতেল উৎপাদিত হয়।

কুসুম গাছে এপ্রিলের মাঝামাঝি দ্বিতীয় দফায় কিছু কিছু বিটপে নতুন পাতা ছাড়ে। তবে সেই শোভা প্রথম বসন্তের মতো নয়। কুসুম গাছের চারা চার বছর আগে নদিয়া জেলায় লাগানো হয়েছে। বীজ থেকে তৈরি গাছ।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here