বাংলা আবাস যোজনায় ভিক্ষুক মহিলাকেও দিতে হল কাটমানি, কুমারগঞ্জে শাসক নেতাদের তোলাবাজির ছবি ভাইরাল

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ২ মার্চ: কুমারগঞ্জে বাংলা আবাস যোজনার ঘর পেয়ে ভিক্ষুক মহিলাকেও দিতে হল কাটমানি। অভিযোগের তীর শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো শোরগোল। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণপুরের বিশ্বনাথপুর এলাকার।

জানা যায়, এলাকার বাসিন্দা মালা পাল টিনের একটি ভাঙ্গাচোরা বাড়িতেই থাকেন। পরিবারে আর তেমন কোনও সদস্য না থাকায় ভিক্ষেবৃত্তি করেই দিন কাটে অসহায় ওই মহিলার। এমন পরিস্থিতিতেও মেলেনি কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা বলে অভিযোগ বৃদ্ধার। যদিও বেশ কয়েক বার আবেদন করে বাংলা আবাস যোজনার ঘর পান ওই বৃদ্ধা। দিন কয়েক আগে ওই প্রকল্পের ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মধ্যে প্রথম কিস্তির প্রায় ষাট হাজার টাকা বৃদ্ধার অ্যাকাউন্টে ঢুকতেই নজর পড়ে শাসক দলের কিছু স্থানীয় নেতার। যার পরেই একপ্রকার জোর করে বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে ৪ হাজার টাকা কাটমানি নেন ওই নেতারা বলে অভিযোগ। বৃদ্ধা কান্নাকাটি করলেও কোন কাজ হয়নি। এই ঘটনার গোপন ভিডিও ছবি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে শাসক দলের একাংশ নেতৃত্বরা। যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।

সরকারি ঘরের কাটমানি নেবার সাথে দলের কেউ যুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন, কুমারগঞ্জ ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক গুহ।

অসহায় বৃদ্ধা মালা পাল জানিয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়া হয়েছে। এলাকার কিছু নেতারাই ওই টাকা নিয়ে গিয়েছেন। কান্নাকাটি করলেও কোনও লাভ হয়নি।

এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ মুর্মু ও নরেন মার্ডিরা জানিয়েছেন, ভিক্ষে করে কোনও মতে দিন কাটে ওই বৃদ্ধার। তাঁর কাছ থেকে এই ভাবে তৃণমূল নেতাদের টাকা নেওয়া তারা মেনে নিতে পারেননি। সরকারি ঘরের জন্য কেন টাকা দিতে হবে নেতাদের সেই প্রশ্নও তুলেছেন তারা।

বিজেপির বুথ সভাপতি তাপস পাল জানিয়েছেন, অসহায় মহিলা ভিক্ষে করে দিন যাপন করেন। অভিযুক্তদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

কুমারগঞ্জের বিডিও দেবদত্ত ব্যানার্জি জানিয়েছেন, তিন কিস্তির টাকা উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই ঢোকে। এর জন্য কাউকেই টাকা দিতে হয় না। ঘটনার অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *