অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, ১৫ মে: ফেসবুকে অক্ষর শুদ্ধ বানা ও ভাষাচর্চা গ্রুপে ‘#বানানের_টিপস্’ দিতে গিয়ে স্বপন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “ক্রিয়াপদের ক্ষেত্রে বোধ হয় আমাদের সংশয় তুলনামূলকভাবে বেশি। ক্রিয়াপদের শেষে ও-কার দেওয়া সংগত কি না? বিশেষত যেখানে আমরা ক্রিয়াপদের শেষে ও উচ্চারণ করে থাকি।
এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির নির্দেশ /সুপারিশশুলো কী সেদিকে একটু নজর দেওয়া যাক।
নিত্যবর্তমানকালের ক্রিয়ার শেষে আমরা কখনো ও-কার ব্যবহার করব না। যেমন: ‘তুমি কী কর?’, ‘তুমি কোন ক্লাসে পড়?’ ইত্যাদি। আবার বর্তমান অনুজ্ঞায় তা হবে ও-কারান্ত। যেমন: ‘তুমি এখন এই কাজটা করো।’ ‘তুমি এই বইটা পড়ো।’
তুচ্ছার্থক বর্তমান অনুজ্ঞার বিষয়ে তাদের সুপারিশ এই সব জায়গায় ক্রিয়াপদের শেষে হসন্ত ব্যবহার করতে হবে। যেমন: ‘তুই কর্’, ‘তুই পড়্’ ইত্যাদি। যদিও সাধারণভাবে আমরা এই ধরনের শব্দে হসন্ত দিই না এবং হসন্ত না দিলেও তা পড়তে আমাদের কোনও অসুবিধা হয় না।
ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞায় শেষে ও-কার তো লাগবেই, প্রয়োজনে একাধিক ও-কার লাগাতে হবে। যেমন: ‘তুমি সময়মতো এই কাজটা কোরো’, ‘তুমি পরে এই লেখাটা পোড়ো’।
তবে অতীত ও ভবিষ্যৎ কালে ক্রিয়াপদের শেষে আমরা ও-কার কখনই ব্যবহার করব না। যেমন: করল, বলল, পড়ল, করত, বলত, পড়ত ইত্যাদি। আবার করেছিল, বলেছিল বা পড়েছিল। অথবা করব, বলব, বা পড়ব ইত্যাদি।
অনেকে বলেন যে ‘হল’ বা ‘হত’ এই শব্দগুলো ‘হলো’, ‘হতো’ এভাবেই লেখা দরকার তা না হলে হল (hall), বা হত (মৃত) শব্দের সঙ্গে গুলিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এই মতের পিছনে কোনো যুক্তি আছে বলে মনে হয় না। কারণ বাংলায় এই ধরনের অজস্র শব্দ আছে যেগুলো বানান আর উচ্চারণ এক হলেও আলাদা অর্থ বোঝায়। পুরো বাক্য পড়ে এবং প্রেক্ষিত বুঝেই আমরা শব্দের অর্থ নির্ণয় করি। তাই প্রশ্ন যে কত শব্দের এই রকম বানান পরিবর্তন করা হবে। অবশ্য বাংলা আকাদেমিও ‘হল’, ‘হত’ এভাবেই লেখার পরামর্শ দিয়েছে।“
প্রাক্তন উপাচার্য ডঃ পবিত্র সরকার সায় দিয়েছেন এই বিশ্লেষণে।