অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, ১৮ মে: ফেসবুকে শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)তে ‘#একটিশব্দহলেওহোকনির্ভুল’ শিরোনামে একটি পোস্ট। সঙ্গীত, সংগীত এমন আরও কয়েকটি শব্দ: অহংকার (অহম্+কার), সংখ্যা (সম্+খ্যা), সংগত (সম্+গত)।
ব্যাখ্যা: আধুনিক বাংলায় ম্-র পর কণ্ঠ্য-বর্গীয় ধ্বনি থাকলে ‘ম্’ স্থানে প্রায়ই ‘ঙ’ না হয়ে অনুস্বার (ং) হয়। সূত্র: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা-৪১।
প্রাক্তন উপাচার্য তথা বাংলার প্রাক্তন অধ্যাপক ডঃ অচিন্ত্য বিশ্বাস অবশ্য এই মতের বিরোধী। তাঁর মতে, সঙ্গীত, অঙ্ক-ই ঠিক। ব্যাংক হতে পারে, বিদেশী শব্দ। বর্গের আনুনাসিক্য ধ্বনি (পঞ্চম অর্থাৎ ঙ ঞ ণ ন ম) হবে যুক্ত-ব্যঞ্জন হলে। যেমন, কঙ্ক, চঞ্চু, গণ্ড, বন্ধ, বিম্ব। কণ্ঠ্য বর্ণে অনুস্বার আনাটা হিন্দীর প্রভাব। কখগঘ-এর সঙ্গে ঙ না থাকলে কী লাভ? লঙ্কা, পাঙ্খি, সঙ্গ, লঙ্ঘন না লিখলে বাংলা ভাষার উচ্চারণ বৈশিষ্ট্য অস্বীকৃত হয়। অঙ্ক লেখাই উচিত।
বদলের তো উদ্দেশ্য থাকবে। কৃষ্ণ না লিখে কৃষণ (ষ-এ অনুস্বার দিলে) লিখলে ভাবী- প্রজন্ম কি বঙ্কিমচন্দ্রের ‘কৃষ্ণচরিত্র’ পড়বে না! এই ঐতিহ্য বিচ্যুতির ফল তো ভয়ঙ্কর!
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রাক্তন উপ বার্তা সম্পাদক শম্ভু সেনের মতে, “বাংলাদেশ বোর্ড কেন, আমাদের বাংলা আকাদেমিও একই কথা বলে। এবং সেটাই হওয়া উচিত বলে আমারও মনে হয়। সংগীত (সম+গীত) হবে। কিন্তু অঙ্ক কখনোই অংক নয়। কারণ অঙ্ক অম+ক নয়। তাই অঙ্ক নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই।“
***