বাংলা চর্চা-৯। মা

অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, ৮ মে: “আমি যদি দুষ্টুমি ক’রে
চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি,
ভোরের বেলা মা গো, ডালের ’পরে
কচি পাতায় করি লুটোপুটি,”

মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার বিশ্ব মা দিবস। ’২০২২-এ দিনটি ৮ মে, অর্থাৎ আজ। আর রাত পোহালেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। আজকের আলোচনায় আনলাম ‘মা‘ কথাটাকে।

মাত্র ১৪ বছর বয়সে মাতৃহারা হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তবু একাধিক ছড়া লিখেছিলেন মা নিয়ে। শুরুতে স্মরণ করেছি রবীন্দ্রনাথের ‘লুকোচুরি’-র ক’টা পংক্তি। সংস্কৃত মাতৃ-মাতা থেকে বাংলায় মা। এদেশে বিভিন্ন ভাষাতেও মা কথাটায় ম-এর ছোঁয়া বেশি। হিন্দিতে मां, অসমীয়াতে মাঁ, মরাঠি ভাষায় आई, গুজরাটিতে માતા (মাতা), তামিলে அம்மா (আম্মা), তেলুগুতে తల్లి (তাল্লি), গুরুমুখীতে ਮਾਂ (Māṁ)। বিদেশি নানা ভাষাতেও তাই— ইংরেজিতে Mother,জার্মান ভাষায় Mutter, স্প্যানিশে madre, গ্রিক ভাষা μητέρα (মিতেরা), ফরাসি ভাষায় mère.

বিভিন্ন ভাষায় কাব্য-সাহিত্য-সঙ্গীতে মাতৃবন্দনার ছড়াছড়ি। দেশকে দেখা হয়েছে মা হিসাবে। আমার তো প্রথমেই মনে আসে ’ও মা,   ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,“ লাইনটা। কবিগুরু ‘আমার   সোনার বাংলা’ গানে ১১ বার ব্যবহার করেছেন মা কথাটা। আর ‘জনগণমন অধিনায়ক’-এ তিনি লিখেছেন “দুঃস্বপ্নে আতঙ্কে   রক্ষা করিলে অঙ্কে স্নেহময়ী তুমি মাতা।“

‘বন্দেমাতরম’-এ বঙ্কিমচন্দ্র সাত বার ‘মাতরম’ ও তিন বার ‘মা’ কথাটা ব্যবহার করেছেন। ১৮৯৬-তে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে প্রথম রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গাওয়া হয় বন্দে মাতরম গানটি।  অধিবেশনে গানটি পরিবেশন করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *