বিকল্প পথে সংগঠিত হওয়ার ডাক বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সঙ্ঘের

আমাদের ভারত, ৩০ জানুয়ারি: “পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচাতে হলে শিক্ষক সমাজকে বিকল্প পথে চলতে হবে, তাছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষমা করবে না।” সোমবার এই মন্তব্য করেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সঙ্ঘের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বাপি প্রামাণিক।

এক বিবৃতিতে বাপিবাবু লিখেছেন, “শিক্ষার চারটি স্তম্ভ হলো শিক্ষার্থী, পাঠক্রম, বিদ্যালয় এবং শিক্ষক। শিক্ষা প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ শিক্ষক। পুরো ব্যবস্থার মূল দায়িত্ব শিক্ষকদের গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত বা ভূমিকা কমে যাচ্ছে। সেই স্থানে ভূমিকা গ্রহণ করছে দলীয় রাজনীতি। আর সুবিধাবাদী, সংকীর্ণ মানসিকতার শিক্ষকগণ নিজের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে সরকার ও রাজনৈতিক দলের তল্পিবহন করছে। তারই ফল পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক সমাজের কথা আজ আর কেউ শুনছেন না। শিক্ষকরা সমাজের শ্রেণি শত্রুতে পরিণত হয়েছেন।

এক্ষেত্রে শিক্ষক সমাজের দোষও কম নয়, কারণ তাঁরা শিক্ষা তথা সমাজের সামগ্রিক উন্নতির কথা ভাবা ভুলে গেছেন। শিক্ষা ব্যবস্থার ভগ্নদশার মূল কারণ গুলির ক্রম তাঁরা বুঝতে পারছেন না। শুধু নিজেদের পেশাগত সুযোগ ও অধিকার নিয়ে মগ্ন, সংগঠন করতে বা সংগঠিত হতে দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র নিজেদের পেশাগত দাবির সময়।

কিন্তু মূল সমস্যাগুলি থেকে আজ তাঁরা অনেক দূরে, তাই আমরা ভারতের একটি বৃহত্তম অরাজনৈতিক শিক্ষক সংগঠন, শিক্ষার সামগ্রিক উন্নতির কথা বলি, সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষকদের পেশাগত দাবির কথা বলি।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষার মূল সমস্যা গুলির ক্রম হল – ১) দলীয় রাজনীতির অনুপ্রবেশ – এই বিষয়ে শিক্ষক সমাজকে ব্যক্তি স্বার্থ ত্যাগ করে মেরুদণ্ড সোজা রেখে দলীয় রাজনীতি বিরুদ্ধে সংগঠিত হতে হবে।
২) ধর্মীয় তোষণ- ৩০% ভোট ব্যাংকের কারনে এখানকার বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ধর্মীয় তোষণ (ঐক্যশ্রী প্রকল্প চালু, মাদ্রাসা শিক্ষার বাজেট বৃদ্ধি, ধর্মীয় পোশাক ও সরস্বতী পূজা বন্ধ বিষয় চুপ থাকা)করছে, এর বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
৩) দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হবে,প্রতিবাদ করতে হবে।
৪) কর্মসংস্থান, নিয়োগ, পরিকাঠামো উন্নতির কথা ভাবতে হবে।

এই সমস্যাগুলি সমাধানের দিকে নজর দিতে হবে এবং শিক্ষক সমাজকে সংগঠিত হতে হবে। তবেই শিক্ষক সমাজের বঞ্চনার (ডি এ, বদলি) কথা, সমাজ মেনে নেবে, সরকারের বিরুদ্ধে সমাজের সাধারণ মানুষ আন্দোলন করবে। শিক্ষক ও চিকিৎসক কোনও পেশা নয়, এগুলি ব্রত। বেতন, ডি এ এর জন্য কর্মবিরতি সমাজ কখনোই ভালো ভাবে নেবে না। তাই আমাদের ভাবার সময় এসেছে বিকল্প পথের, মূল সমস্যা গুলির সমাধানে আমাদের ভুমিকা ঠিক থাকলে কর্মবিরতির প্রয়োজন নেই, আমাদের কথাতেই সমাজ, আমাদের পাশে দাঁড়াবে। তাই চলুন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বিকল্প পথে সংগঠিত হই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *