জটিলতা বাড়ল ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলায়! কমিশনের জবাবে অসন্তুষ্ট আদালত, অস্বস্তিতে রাজ্য, রায়দান স্থগিত

আমাদের ভারত, ২৪ সেপ্টেম্বর:ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল নির্বাচন কমিশন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা শুধুমাত্র একটি উপনির্বাচনের ক্ষেত্রেই কিভাবে তৈরি হলো? বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনকে তা জানিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার কথা বলেছিল আদালত। শুক্রবার সেই হলফনামা জমা দিতেই অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন শুধুমাত্র একটি আসনের জন্যেই সংবিধান আইনের বাধ্যবাধকতা? মুখ্য সচিব কী ভাবে লেখেন সাংবিধানিক সংকটের কথা? মুখ্যসচিবের চিঠিতে কিভাবে পদক্ষেপ করতে পারে নির্বাচন কমিশন? কেন জেতার পরেও আসন ছেড়ে দিলেন তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী?

আজ ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলায় রায় দান স্থগিত করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু শুক্রবার আদালত জানিয়েছে, কমিশনের উত্তরে তারা মোটেও সন্তুষ্ট নয়। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি রাজেশ ভরতদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। ভবানীপুরে উপ নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে এই মর্মে সুপারিশ করে কমিশনকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। এরপর ভোট বিজ্ঞপ্তি জারি করার সময়ও কমিশন সেই কথাই উল্লেখ করেছে। আর তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

মামলাকারীর দাবি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রের জন্য কিভাবে এই সুপারিশ করা যায়? শুক্রবার আদালত এই অভিযোগটিকে সামনে রেখেই কমিশনের কাছে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেন মামলাকারী। তার আগে বৃহস্পতিবার কমিশনের কাছে হলফনামা তলব করে আদালত জানতে চেয়েছিল, মুখ্য সচিব কীভাবে ভোট করানোর সুপারিশ করতে পারেন?

জানা গেছে শুক্রবার তার নির্দিষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেনি কমিশন। মুখ্যসচিবের কমিশনকে চিঠি পাঠানো নিয়ে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল প্রশ্ন তোলেন। তিনি প্রশ্ন করেন, চিঠি লেখার পেছনে মুখ্যসচিবের ভূমিকা কী? ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা হয়েছিল। এতদিনে উত্তর পেলো না আদালত। তবে কমিশনের তরফে জানানো হয় মুখ্যসচিবের কোনও সাংবিধানিক ভুল হয়নি। তাতে বিচারপতি প্রশ্ন করেন তাহলে শুধু ভবানীপুরেই সাংবিধানিক সংকট কেন বলেছেন মুখ্য সচিব? কেন একটি কেন্দ্রে নির্বাচন জরুরি? অথচ অন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হলো না?

মামলার দ্বিতীয় অংশে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কড়া সমালোচনা করেছে হাইকোর্ট। আদালতে বক্তব্য, নির্বাচন করতে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়। একজন প্রার্থী জেতার পরেও যদি ইস্তফা দেন তাহলে ফের উপনির্বাচন হয়। জনগণের টাকাও খরচ হয়। আদালতের প্রশ্ন, কেন জনগণের অর্থ এভাবে খরচ করা হবে? এই বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে মামলা চলবে। আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলে, জেতার পরেও আসন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর সেখানে বিপুল টাকা খরচ করে আবার ভোট হচ্ছে। এই প্রবণতা গোটা দেশজুড়ে দেখা যাচ্ছে। এর জন্য কি নিয়ম রয়েছে? কমিশনের কাছে তা জানতে চেয়েছে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *