
আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ২২ মে: সোমবার ভর দুপুরে বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো বীরভূমের দুবরাজপুর থানার পদুমা পঞ্চায়েতের ঘোড়াপাড়া। জানাগেছে, গ্রামের তৃণমূল কর্মী শেখ সফিকের কোঠা ঘরের দোতালায় মজুত শতাধিক বোমা ফেটেই এই বিপত্তি ঘটেছে। তবে ওই ঘরে কেউ না থাকায় হতাহতের কোনো খবর জানা যায়নি। এদিকে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়ায় পাশের সাজিনা ও ধ’গ্রামেও। ওই সব এলাকার মানুষের বক্তব্য, ভূমিকম্পের মতো পুরো এলাকা কেঁপে উঠেছিল। বিস্ফোরণের সময় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরণে কোঠা বাড়ির একাংশ ভেঙ্গে পড়লেও প্রমাণ লোপাটের জন্য বাড়ির মালিক শেখ সফিক এবং তার সহকারী দলবল বিস্ফোরণ স্থল খড় দিয়ে ঢেকে দেয়। খানিকটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো। কিন্তু ঘটনাস্থলে বারুদের গন্ধ। দেওয়ালে বোম বিস্ফোরণের চিহ্ন সবটা মুছে ফেলতে পারেনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্তের পর শেখ সফিককে না পেয়ে পরিবারের সদস্য শেখ মহিলালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় সিপিআই (এম) দলের নেতা সাধন ঘোষ জানান, রাজ্যজুড়ে বারুদের স্তুপ। আতঙ্কের মধ্যে মধ্যে বাস করছি আমরা। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ওই সমস্ত বোমা মজুত করছে। এলাকার সমস্ত দুষ্কৃতী তৃণমূলের ছত্রছায়ায় আশ্রয় নিয়ে নানা কু-কর্ম করছে। বোমা-বারুদ মজুত করছে।
দুবরাজপুর বিধানসভার বিজেপি দলের বিধায়ক অনুপকুমার সাহা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, তৃণমূলের জামানায় বাংলায় বারুদের শিল্প তৈরি হয়েছে। প্রতিদিনই বিস্ফোরণের খবর পাচ্ছি। বাংলার প্রশাসন এসব কর্ম বন্ধে ব্যর্থ। এঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাইবো। চাইবো এনআইএ তদন্ত। বীরভূম বারুতে স্তূপে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষের জীবনহানির আশঙ্কা করছি আমি। তিনি দাবি করেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে আমদানি করছে বোমা-বারুদ। প্রশাসনের উচিত সঠিক তল্লাশি করে মজুত বোমা উদ্ধার করা। আর মজুদকারীদের সনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।
তৃণমূল কংগ্রেসের পদুমা অঞ্চল সভাপতি তরুণ গড়াই জানান, সম্পূর্ণটাই বিরোধীদের অপপ্রচার ও চক্রান্ত। পরিত্যক্ত বাড়িতে বিরোধী দলের কেউ বিস্ফোরক রেখে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তারপর আঙুল তুলছে আমাদের দলের অর্থাৎ তৃণমূলের কর্মীদের দিকে। আমরাও পুলিশকে অনুরোধ করেছি বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে বিস্ফোরক মজুতকারীকে কব্জায় নিতে। আমিও সিআইডি তদন্তের দাবি করছি।