চা বলয়ে ভাঙনের মুখে বিজেপি

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১৮ নভেম্বর: আবারও রাজনৈতিক শিরোনামে ভারত-ভূটান সীমান্তের কালচিনি ব্লকের জয়গাও। কয়েকদিন আগেই জয়গাও-তে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির দিলীপ ঘোষের কনভয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে এবার সেখানেই বিরোধী বিভিন্ন দল থেকে প্রায় ২১০০জন নেতা, কর্মী, সমর্থক সামিল হল রাজ্যের শাসকদলে। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস সহ বামফ্রন্ট থেকে আসা সকলের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মন্ত্রী মলয় ঘটক, জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মৃদুল গোস্বামী সহ জেলার অনান্য নেতারা। তবে এদিন আগতদের মধ্যে বেশিরভাগই বিজেপি এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থক বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।

পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী ভারত–ভুটান সীমান্তের জয়গাঁও শহরে প্রায় একঘন্টা ধরে চলে এই দলবদলের কর্মসূচি। মন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, বিধায়ক জেমস কুজুর, ঋতব্রত ব্যানার্জি, জেলা কোয়ার্ডিনেটার পাশাং লামা সহ জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
জানা গেছে, কালচিনি ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকেই এদিন কমবেশি মানুষ তৃণমূলে যোগ দিতে আসেন। তাৎপর্যপুর্নভাবে এদিন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একটি অংশও সরাসরি রাজ্যের শাসক দলে যোগ দেয়, যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে অত্যন্তই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। পুরুষ, মহিলা ছাড়াও ছাত্র-যুবদের একাংশ ছিলেন নবাগতদের তালিকায়।

এদিন মন্ত্রী মলয় ঘটককে প্রায় ৫০০ বাইকের র‍্যালি করে দলশিংপাড়া থেকে জয়গাঁয় এনএস রোডের সভায় নিয়ে আসা হয়। এদিনও জয়গাঁও শহরের মানুষদের দাবি ছিল জয়গাঁকে পুরসভার মর্যাদা দিতে হবে। মন্ত্রী জানান, দাবিটি অবশ্যই রাজ্য ক্যাবিনেটে রাখবেন। মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাবেন।” পাশাপাশি মন্ত্রী নিজের বক্তব্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দিলীপ ঘোষের তীব্র সমালোচনা করেন।”

চা-শ্রমিকদের জন্য খুশির খবর দিয়েছেন মলয় ঘটক।বলেন, “তৃণমূল সরকারের আমলে গত ১০ বছরে রেকর্ড পরিমান হাজিরা বেড়েছে চা-শ্রমিকদের। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে গত ৯ মাস চা-শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা সম্ভব হয়নি। দ্রুত সেই আলোচনা শুরু হবে।” আসামের চা-শ্রমিকদের তুলনায় বাংলার চা-শ্রমিকরা কতটা বেশি অধিকার ভোগ করছে তাও তথ্য দিয়ে এদিন তুলে ধরেন মলয় ঘটক।

জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “কিছুদিন আগেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি জয়গাঁতে আসেন। তবে মানুষ যে বিজেপির পাশে নেই তা আরও একবার প্রমাণিত। আজ শুধু শুরু হল। আরও ভাঙন অপেক্ষা করছে বিরোধীদের।”

তৃণমূল কংগ্রেসের কালচিনি ব্লক সভাপতি পাসাং লামা বলেন, সকলকে নিয়ে আমরা ব্লকের উন্নয়নের কাজ করব। দলে সবাই যোগ্যতা অনুযায়ী মর্যাদা পাবে। আমরা চাই দিলীপ ঘোষ প্রতি সপ্তাহে একবার জয়গাঁতে আসুক।” এদিকে এদিনের সভার পর দলের একটি মহল বলেন, চা-বলয়ে নেপালী সম্প্রদায়ের একটি অংশ যেভাবে এদিন বিজেপির পাশ ছেড়েছে তাতে চা-বলয়ে ভোট রাজনীতিতে নতুন সমীকরন তৈরি হতেও পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *