“বিজেপি বিশ্বাসঘাতক”, পুরুলিয়ায় বললেন বাবুল

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ১ ডিসেম্বর: কোনো পালটা সভা নয়, নিজেদের কথা বলার সভা। পুরুলিয়ার লধুড়কায় তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা এবং বিরোধীদের কুৎসা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সভায় এভাবেই সুর বেঁধে দিয়ে সভা শুরু করলেন বাবুল সুপ্রিয় ও মহুয়া মৈত্র। অবশ্য উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে অনুন্নয়ন ও বঞ্চনার কথা উঠলো। বিজেপির মিথ্যাচার, কুৎসার বিরুদ্ধে মুখ খুললেন দুই নেতা নেত্রী।

জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া এই সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া, চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাত, দলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক শান্তিরাম মাহাত, রাজ্য সম্পাদক স্বপন বেলথরিয়া, মন্ত্রী সন্ধ্যারানী টুডু, দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু, আইএনটিটিইউসি সভাপতি উজ্জ্বল কুমার, বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন ও সুশান্ত মাহাতো প্রমুখ।

সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই মহুয়া মৈত্র বলেন, মিঠুন চক্রবর্তী অভিনেতা হিসাবে প্রনম্য। কিন্তু রাজনীতিতে তিনি গ্ৰাহ্য করার মতো কেউ নন। আগে কমপক্ষে একটা পঞ্চায়েত আসনে জিতে আসুন তিনি, তারপর তাঁকে প্রতিপক্ষ মানবো এবং পাল্টা সভা করে জবাব দেব। এদিন মহুয়া কেন্দ্রীয় সরকারের মিথ্যাচার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, বিজেপি মহিলাদের কথা বলে, ওরা নাকি মহিলাদের সম্মান দিতে মহিলা রাষ্ট্রপতি করেছে। তাহলে তারা লোকসভায় সমানুপাতিক হারে মহিলা প্রতিনিধিত্ব রাখে না কেন? কেন আনা হয়নি মহিলা সংরক্ষণ বিল। তিনি বলেন, দলিত, তপশিলিরা এই বিজেপির কাছে ধর্ষিতা। দৈনিক গড়ে দশজন দলিত মহিলা ধর্ষিতা হন দেশে। তিনি বলেন, উন্নয়নের ফিরিস্তি দিলে শেষ হবে না। বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেছেন, তা বামেরা করতে পারেনি। কেউ করেনি।

বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য মিঠুন চক্রবর্তীর কথা বলেন। তিনি বলেন, মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তিনি অনেক সিনেমায় কাজ করেছেন। এই মহাগুরু রাজনীতি করতে এসে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালোবাসা পেয়েছেন তাও জানি। তবু তিনি বিজেপিতে গেলেন। এই বিজেপি কতটা মিথ্যাচারী তা দীর্ঘদিন বিজেপিতে থাকার সুবাদে আমি জানি। এরপর একে একে নোটবন্দি, কোভিডের সময় বিজেপির মিথ্যাচার, উন্নয়নের নামে বঞ্চনার নানা দিক তুলে ধরেন তিনি। পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোকে তিনি বলেন, রাজ্যে বিরোধী দলের এমপি হলে কাজ করা যায় না, এমন অভিযোগ না তুলে কাজ করুন। আমি নিজে বিরোধী দলের এমপি ছিলাম একসময়। আমার প্রস্তাবে তো দিদি মেট্রো রেল প্রকল্পে, আসানসোলের উন্নয়নে একগুচ্ছ প্রকল্পে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, পুরুলিয়ার মানুষ প্রশ্ন তুলুন, এখান থেকে নির্বাচিত সাংসদ, বিধায়কদের কাছে তারা কি পেয়েছেন?

এদিন সভার শেষে জেলা সভাপতির হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন পুরুলিয়া পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর মোসুমী ঘোষ ও কাশিপুর ও হুড়ার একাধিক গ্ৰাম থেকে শতাধিক বিজেপি সমর্থক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *